

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররম জেলার সীমান্তে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়েছে।
পাক-আফগান সীমান্তে ফের উত্তেজনা, ট্যাংক ও পোস্ট ধ্বংসের দাবি ইসলামাবাদের
খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররম সীমান্তে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে চলা এই সামরিক উত্তেজনায় দুই দেশের মধ্যে আবারও পাল্টাপাল্টি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, সংঘর্ষের শুরুটা হয় বিকেলে, যখন আফগান সেনারা এবং পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) যৌথভাবে কুররম সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা পাল্টা হামলা চালিয়ে আফগান সেনাবাহিনীর ৪টি সীমান্ত পোস্ট এবং ৬টি ট্যাংক ধ্বংস করেছে। সেইসঙ্গে টিটিপির এক সিনিয়র কমান্ডারও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা।
পাকিস্তানি সেনা সূত্র জানায়, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশের শামশাদ পোস্ট লক্ষ্য করে বড় ধরনের হামলা চালানো হয়। এতে একাধিক আফগান সেনা ও টিটিপি সদস্য হতাহত হন, অনেকে আবার পালিয়ে যান।
শামশাদের পর, নার্গসার পোস্টেও হামলা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী, যেখানে ট্যাংক মোতায়েন করেছিল আফগান বাহিনী। এখানেই ধ্বংস হয় আরও চারটি ট্যাংক। এরপর ধ্বংস করা হয় তুর্কমানজাই ও পোলসেন সেনা পোস্ট—যার একটির কাছে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ছিল বলে দাবি পাকিস্তানের।
এই অভিযানে পাকিস্তানের সেনারা যে কৌশলে আফগান পোস্টগুলো ধ্বংস করেছে, তা নিয়ে এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, কিছু সেনা আত্মসমর্পণ করে সাদা পতাকা তোলে, বাকিরা পালিয়ে যায়।
এর আগে ১১ অক্টোবর, আফগান বাহিনী পাকিস্তানের আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর, দির, কুররম, চিত্রাল, বারামচা প্রভৃতি সীমান্ত এলাকায় হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়। সে সময় ২৩ জন পাকিস্তানি সেনা ও ২০০ জনের বেশি আফগান সেনা নিহত হওয়ার দাবি করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সংস্থা আইএসপিআর।
এই সাম্প্রতিক উত্তেজনার একটি বড় কারণ ৯ অক্টোবর কাবুলে চালানো পাকিস্তানের বিমান হামলা। এতে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেসুদ নিহত হয়েছেন বলে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগী নিহত হয়েছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
এদের মধ্যে ক্বারী সাইফুল্লাহ মেসুদ অন্যতম, যাকে ভবিষ্যতে টিটিপির নেতৃত্বে ভাবা হচ্ছিল।
এই ঘটনার পর আফগান তালেবান সরকার জানায়, পাকিস্তানের কাবুলে চালানো বিমান হামলা তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। আর সেই কারণেই ১১ অক্টোবরের হামলা চালানো হয় বলে দাবি তাদের।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তজুড়ে দুপক্ষই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা যত না কমছে, বরং আরও বিস্তৃত হচ্ছে।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরণের সংঘর্ষ শুধু দুই দেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্যই উদ্বেগজনক।
মন্তব্য করুন
