রবিবার
০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদারের হুঁশিয়ারি দিল ইসরাইল

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
expand
ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর সামরিক অভিযান আরও তীব্র করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। এর একদিন আগে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন।

২০২৪ সালের নভেম্বরে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও, ইসরাইল এখনও দক্ষিণ লেবাননের অন্তত পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন রেখেছে এবং নিয়মিত বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

রোববার (২ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, হিজবুল্লাহ আগুন নিয়ে খেলছে, আর লেবাননের প্রেসিডেন্ট বিষয়টি নিয়ে সময় নষ্ট করছেন। লেবানন সরকারকে অবিলম্বে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করে দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরাতে হবে। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা হবে, এবং তা আরও বাড়বে। উত্তর ইসরাইলের নাগরিকদের ওপর কোনো হুমকি আমরা সহ্য করব না।

ইসরাইলের এক সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা গেছে—হিজবুল্লাহ সিরিয়া থেকে শত শত স্বল্প-পাল্লার রকেট চোরাইপথে লেবাননে নিয়ে এসেছে এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধার করছে। তাঁর দাবি, যদি লেবানন সরকার হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে ব্যর্থ হয়, তবে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চল আবারও ইসরাইলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার যুদ্ধ শুরুর পর হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তরাঞ্চলের হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। প্রায় এক বছর ধরে সংঘাত চলার পর ২০২৪ সালের শেষ দিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।

ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ যুদ্ধের সময় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে, তবে এখনো অস্ত্র ও অর্থনৈতিকভাবে টিকে আছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইসরাইলের এক হামলায় সংগঠনের প্রধান হাসান নাসরাল্লাহসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতা নিহত হন।

যুদ্ধবিরতির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র লেবানন সরকারকে হিজবুল্লাহ নিরস্ত্র করার আহ্বান জানাচ্ছে, যদিও হিজবুল্লাহ ও তাদের রাজনৈতিক মিত্ররা সে প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে।

তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরাইল লেবাননে বিমান হামলা বন্ধ করেনি। ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, এসব হামলা হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনায় লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ইসরাইলি স্থলবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে একটি প্রাণঘাতী অভিযান চালায়। এরপর লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন সেনাবাহিনীকে এসব অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নির্দেশ দেন।

গত অক্টোবরের মাঝামাঝি প্রেসিডেন্ট আউন ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতা করছিলেন। কিন্তু আউনের অভিযোগ—তার আলোচনার আহ্বানের জবাবে ইসরাইল বরং হামলা আরও বাড়িয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (১ নভেম্বর) দক্ষিণ লেবাননের নাবাতিয়েহ জেলায় ইসরাইলি বিমান হামলায় চারজন প্রাণ হারান।

লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, একটি গাড়িতে গাইডেড মিসাইল নিক্ষেপ করে ইসরাইলি সেনারা এই হামলা চালায়।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী পরে হামলার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, নিহতদের একজন হিজবুল্লাহর রাদওয়ান ইউনিটের সদস্য ছিলেন।

তাঁরা দাবি করেন, ওই ব্যক্তি অস্ত্র পরিবহন এবং দক্ষিণ লেবাননে সংগঠনের সামরিক ঘাঁটি পুনর্গঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন—যা ইসরাইল ও এর নাগরিকদের জন্য হুমকি এবং বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন