

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব তাদের শ্রম নীতিতে ঐতিহাসিক পরিবর্তন এনেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে প্রায় ৫০ বছর পুরোনো কাফালা বা পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবস্থা, যা এতদিন বিদেশি শ্রমিকদের চাকরি ও বসবাস নিয়ন্ত্রণ করত।
এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ প্রবাসী শ্রমিক সরাসরি উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের অধিকাংশই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে কাজ করতে গেছেন।
বর্তমান নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন, এক্সিট ভিসা ছাড়াই দেশ ত্যাগ করতে পারবেন, এবং পূর্বের কাফালা কাঠামোর অধীনে যেসব আইনি সুরক্ষা সীমিত ছিল, সেগুলোর পুরো সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
সৌদি প্রেস এজেন্সি (SPA)-এর তথ্যমতে, কাফালার জায়গায় এখন চালু হয়েছে চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান মডেল, যা শ্রমিকদের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা দুটোই বাড়াবে।
এই সংস্কার সৌদি সরকারের ‘ভিশন ২০৩০’ উদ্যোগের অংশ, যার লক্ষ্য দেশের অর্থনীতি আধুনিকীকরণ ও শ্রমবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে রূপ দেওয়া।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পদক্ষেপকে সৌদির শ্রম ইতিহাসে ‘নতুন অধ্যায়’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের মতে, কাফালা বিলুপ্তি একটি বড় অর্জন হলেও বাস্তব পরিবর্তন নিশ্চিত করতে কঠোর তদারকি ও সঠিক বাস্তবায়ন প্রয়োজন হবে।
‘কাফালা’ শব্দটি আরবি থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘পৃষ্ঠপোষকতা’ বা ‘স্পন্সরশিপ’। ১৯৫০-এর দশকে উপসাগরীয় অঞ্চলে এই ব্যবস্থা চালু হয়। এতে বিদেশি শ্রমিকদের সবকিছু-চাকরি, বসবাস, এমনকি দেশ ছাড়ার অনুমতিও-সম্পূর্ণ নির্ভর করত নিয়োগকর্তার ওপর।
এই ব্যবস্থার ফলে বহু শ্রমিক চরম নির্ভরশীলতা ও শোষণের শিকার হতেন। তাই এর অবসানকে সৌদি আরবের শ্রমনীতিতে এক ঐতিহাসিক মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
