বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্নের বক্তব্যে কঠোর অবস্থান আসামের মুখ্যমন্ত্রীর

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
expand
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত এবং সিকিমকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা করার হুমকি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এমন বক্তব্য বা হুমকি ভারত কোনোভাবেই মেনে নেবে না।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি নেতারা যদি ভারতের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিয়ে বারবার হুমকিমূলক কথা বলতে থাকেন, তাহলে দিল্লি নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকবে না।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশে যুক্ত করার আহ্বান একটি ‘অস্বাস্থ্যকর মানসিকতার’ প্রতিফলন। তিনি দাবি করেন, গত এক বছর ধরেই বাংলাদেশে এ ধরনের মন্তব্য শোনা যাচ্ছে, যা ভারতের কাছে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল আলাদা করে অন্য দেশের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত—এ ধরনের চিন্তা বাস্তবতাবিবর্জিত এবং ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ এমন কল্পনাও করতে পারে না।

ভারতের শক্তি ও অবস্থান তুলে ধরে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি বড় দেশ, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। তাঁর অভিযোগ, বাংলাদেশে ভারতের বিষয়ে ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি সতর্ক করে দেন, ভারতের বিরুদ্ধে এ ধরনের আচরণ অব্যাহত থাকলে তার জবাব দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ মন্তব্য করেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত। তিনি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকারে বিশ্বাস না করা ব্যক্তিদের আশ্রয় দিতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেবে। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ভারত অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি অনুযায়ী, এই ধরনের বক্তব্য এটিই প্রথম নয়। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছিলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত এবং সমুদ্রে যাওয়ার একমাত্র পথ বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করে।

এই বক্তব্যের পর থেকেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগকারী পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডোর যা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত নিয়ে বিভিন্ন হুমকিমূলক মন্তব্য আসতে শুরু করে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়।

এ প্রসঙ্গে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ভারতকে হুমকি দেওয়ার আগে বাংলাদেশের নিজেদের দুটি ‘সংবেদনশীল করিডোর’ নিয়ে ভাবা উচিত। এর একটি হলো পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় পর্যন্ত বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে বিস্তৃত প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পথ। অন্যটি হলো দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম করিডোর।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X