

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


দীর্ঘ এক বছরের আলোচনার পর অবশেষে রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকারনামা ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয় সনদ স্বাক্ষরের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান।
রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নেওয়া ২৫টি রাজনৈতিক দলের নেতারা, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা এই দলিলে স্বাক্ষর করেন।
সনদ স্বাক্ষর শেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজকের এই সমঝোতা প্রমাণ করেছে, আমরা চাইলে অসম্ভবকেও সম্ভব করতে পারি। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একসঙ্গে বসে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া নিঃসন্দেহে ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই সনদ বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ঐক্য ও সংস্কারচেতনার প্রতীক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তবে, সনদটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে অনেক প্রশ্নও তুলছেন।
কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, ‘প্রায় শতভাগ মুসলমান একটি দেশের জাতীয় সনদের কোথাও বিসমিল্লাহ লেখা নেই।’ আবার কারও দাবি, ‘সনদটিতে ধর্মীয় মূল্যবোধকে উপেক্ষা করা হয়েছে।’
এসব প্রশ্ন ও অভিযোগ প্রসঙ্গে শনিবার (১৮ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলেছেন প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ।
তিনি বলেন,‘জুলাই সনদে অনেক সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের পেছনে মাদ্রাসা ছাত্রদের ভূমিকা, ধার্মিকদের ভূমিকা, বিশেষ করে আখিরাতে বিশ্বাসী মানুষের ভূমিকা, ধর্মীয় মূল্যবোধের বিশেষ ভূমিকা, আল্লাহর জন্য প্রাণ দেওয়ার প্রেরণা— এগুলোর যে ভূমিকা ছিল সেটি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার এবং স্পষ্ট। এরপরও এই সনদের কোথাও সেই বিষয়গুলোকে তুলে আনা হয়নি।’
‘অথচ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি দীর্ঘদিন পর্যন্ত যে অনাচার এবং অবিচার চলে এসেছে, তার ফলশ্রুতি জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছে।’
আহমাদুল্লাহর ভাষায়, ‘ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি যে জুলুম-নিপীড়ন ছিল, জুলাই আন্দোলনে সেটার যে একটা ভূমিকা ছিল, সে বিষয়টি এখানে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মুসলিমপ্রধান একটি দেশে ধর্ম থেকে দুরদুর করার যে একটা প্রবণতা দীর্ঘদিন থেকে আমরা দেখে আসছি, সেটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে জুলাই সনদেও আমরা দেখেছি। এটা খুবই আপত্তিকর একটি বিষয়। এর বাইরে আরও আপত্তি করবার মতো বেশকিছু জায়গা এখানে আছে। তারপরও এই সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার দরকার ছিল এবং এ বিষয়টির একটা অফিশিয়াল রূপ হওয়ার দরকার ছিল, সেটি হয়েছে।’
সবশেষে ইসলামি এই স্কলার বলেন, ‘সনদটিতে যে ত্রুটি ও অপূর্ণতা আছে, সেগুলো কারেকশন করার সুযোগ ছিল। কারণ এগুলো অনেক আগে থেকেই বলা হচ্ছিল। কিন্তু কোনোভাবেই তারা কানে নেয়নি। এজন্য আসলে জুলাইয়ের যে স্পিরিট আছে, সেই স্পিরিট দিন দিন দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্থিমিত হতে যাচ্ছে। আমি আশা করব, সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা এখান থেকে কিছুটা হলেও বার্তা গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন।’
মন্তব্য করুন
