সোমবার
০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সোমবার
০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকার খায়েসের অর্থই হচ্ছে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা: ডা. তাহের

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের
expand
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে খুশি করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ হচ্ছে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সরকারের প্রধান কাজ সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন। সুতারাং সংস্কার ও বিচার বাদ দিয়ে শুধু নির্বাচন দিলে সরকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে না।

রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত "২৮ অক্টোবর থেকে ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের কালো থাবা ও আগামীর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ"- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২৮ অক্টোবর জাতির গৌরবের একটি দিন। এই দিন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন উৎস্বর্গ করেছে। তাদের আত্মদানের পথ ধরেই চব্বিশের বিপ্লব অর্জিত হয়েছে। পুরোনো ফ্যাসিবাদ আবার আসতে চাইলে আবারো লড়াই হবে; নতুন ফ্যাসিবাদের পরিণতিও বেশি ভালো হবে না।

ডা. তাহের বলেন, জুলাই সনদের বিরোধীতা করার মানে হচ্ছে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। এক ব্যক্তির হাতে অসম ক্ষমতা থাকলে ফ্যাসিজমের জন্ম হয়। দশ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার পর আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েস মানেই একনায়কতন্ত্র কায়েম করে দেশকে পৈত্রিক সম্পত্তিতে রূপ দেওয়া।

তিনি বলেন, প্রকৃত দেশপ্রেমিক কোনো নেতা বারবার ক্ষমতা চায় না। রবং তারা দায়িত্ব নিতে সাহস করে না। যেখানে দেশের সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে কোনো ব্যক্তি দশ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না, সেখানে বিএনপির আপত্তির উদ্দেশ্য জাতি বুঝে। দড়ি বেঁধে এনে কেউ বিএনপিকে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই সনদ পড়ে-বুঝেই সব দল স্বাক্ষর করেছে। বিএনপিও স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাক্ষর করেছে। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে ঈদের মতো উদযাপন করেছে। এখন তারা আবোল-তাবোল বলতে শুরু করেছে।

গণভোট কোনভাবেই জাতীয় নির্বাচনের দিন সম্ভব নয় উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, হাসিনা শহীদ-আহতদের জন্য ব্যথিত না হয়ে মেট্রোরেল ভাংচুরের জন্য কান্নার নাটক করেছে। একইভাবে বিএনপির কাছে দুই হাজার শহীদ ও ৫০ হাজারের অধিক আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের রক্তের চেয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেশি দামি। তারা দাবি করছে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে হলে ৩ হাজার কোটি টাকা বাঁচবে। অথচ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ব্যতিত দেশ বারবার পথ হারাবে। শহীদদের রক্তের চেয়ে টাকার অংক কখনো দামি হতে পারে না।

তিনি বিএনপিকে শহীদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নভেম্বরের গণভোট আয়োজনে সরকারকে সহেযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণভোটে জনগণ যেই রায় দেবে জামায়াতে ইসলামী সেই রায় মেনে নেবে। তিনি প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি অন্যায়ের কাছে অতীতেও মাথানত করেননি। আশা করছি এখনও কারো কাছে মাথানত করবেন না। আপনার প্রতিশ্রুতি ছিল সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। সুতারাং আপনার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় জুলাই সনদের বাস্তবায়নের জন্য নভেম্বরে গণভোট এবং ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করুন। সংস্কার বাস্তবায়ন না হলে ড. ইউনূস জিরো, আর বাস্তবায়ন হলে ড. ইউনূস হিরো। নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বিশ্বের কাছে যেমন সম্মানিত এবং গ্রহনযোগ্য জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের কাছেও চিরকাল সম্মানিত এবং গ্রহনযোগ্য হয়ে থাকবে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন