

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি গত ৩ নভেম্বর মোট ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে। তবে রাজনৈতিক কৌশল মাথায় রেখে ৬৩টি আসন তখন ফাঁকা রাখা হয়।
পরবর্তী সময়ে মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করে দল। ফাঁকা আসনগুলো কীভাবে বণ্টন হবে- তা নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিএনপি ও তাদের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিয়মিত আলোচনায় ব্যস্ত সময় কাটছে।
দলের নীতি–নির্ধারণী সূত্র জানায়, শরিকরা যে প্রার্থী তালিকা দিয়েছে, তা খুঁটিয়ে দেখে বিএনপি একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে। এরপর মাঠপর্যায়ের জনপ্রিয়তা, সাংগঠনিক অবস্থান, সম্ভাব্য ভোটব্যাপ্তি, গ্রহণযোগ্যতা এসব সূচক বিবেচনা করে চূড়ান্ত যাচাই চলছে। সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী নিবন্ধিত মিত্রদের নিজেদের প্রতীকেই লড়তে হবে এই শর্তটিও আসন বিন্যাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিএনপি নেতারা জানান, চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যেই ফাঁকা থাকা ৬৩ আসনে দলীয় ও জোটের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। তপশিল ঘোষণার আগেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে দল।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগিরই জোটের প্রধান নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। বৈঠকের আলোচনার ওপর নির্ভর করে জোট ও বিএনপির প্রার্থী একই সঙ্গে কিংবা ধাপে ধাপে ঘোষণা হতে পারে।
এদিকে ঘোষিত ২৩৭ আসনের কয়েকটিতে স্থানীয় দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ায় সেই সমস্যাও সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিরোধ মিটিয়ে আনার। কোথাও সমাধান না হলে মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ঢাকায় ডেকে এনে সমঝোতা করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার কুমিল্লা-৯ আসনে এ ধরনের সমঝোতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ যেখানে প্রার্থী আবুল কালাম ও মনোনয়নপ্রত্যাশী সামিরা আজিম দোলার বিরোধ মিটে যায়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মিত্রদের জন্য যেসব আসন বিএনপি ছাড়বে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। জোট শরিকরা যেমন ঘোষণা দেবে, বিএনপিও তেমনই ঘোষণা করবে। আর আরপিও ফের সংশোধিত না হলে নিবন্ধিত শরিকদের তাদের নিজ দলের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যেসব আসনে এখনও সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানে আমরা কাজ করছি। কিছু আসনে মনোনয়ন প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত শেষ করা হবে। আশা করছি, এ মাসের মধ্যেই সব মনোনয়ন ঘোষণা করতে পারব।
অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির সাম্প্রতিক বৈঠকে মিত্ররা দ্রুত মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অনুরোধ জানায়। তারা বলেন, বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করায় প্রতিদ্বন্দ্বীরা ইতোমধ্যে প্রচারণায় নেমে পড়েছে, ফলে শরিকদের ক্ষেত্রেও দেরি না করাই উত্তম। বৈঠকে সংশোধিত আরপিওর বাস্তব প্রয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়।
ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্ররা ছাড়াও জামায়াতের বাইরের ইসলামী এবং বামপন্থি কয়েকটি দলকে নিয়ে বৃহত্তর নির্বাচনী জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বিএনপি। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি দলের নিবন্ধন রয়েছে। সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, এসব দলকে নিজেদের দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। গত ৪ নভেম্বর আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মন্তব্য করুন
