শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডাকসু নির্বাচনে স্বৈরাচার ও রাজাকার এক হয়ে গেছে: প্রিন্স

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এমরান সালেহ
expand
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এমরান সালেহ

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনে স্বৈরাচার ও রাজাকার একাকার হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, গভীর ষড়যন্ত্রের ফল ডাকসু নির্বাচনে প্রতিফলিত হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র আমরা অনুমান করতে পারছিলাম, তবে নিয়ন্ত্রণ বা মোকাবিলা করতে পারিনি।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, “১৭ বছর রাষ্ট্রীয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ছাত্রলীগের নির্মম দমন-নির্যাতনে ছাত্রদল ক্যাম্পাসের বাইরে। কিন্তু শিবির ছাত্রলীগের শরীরে বিলীন হয়ে হাসিনা, তার বাবা ও নৌকার নামে স্লোগান দিতে দিতে অস্থির ছিল। তারা আবার ৫ আগস্টের পর শিবির নামে আবির্ভূত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এই নির্বাচনে প্রায় ৮০ ভাগ ভোট কাস্ট হওয়া মানে বিগত ১৬ বছরে দুর্দান্ত প্রতাপের সাথে থাকা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ভোটও কাস্ট হয়েছে। এই ভোট গেলো কার পকেটে—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে, বিগত ১৬ বছর ঢাকা ইউনিভার্সিটিসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের শরীরে গুপ্তভাবে বিলীন হয়ে থাকা শিবিরের বিজয়ের নেপথ্যের কারণ বেরিয়ে আসবে। ছাত্রলীগের গুপ্ত ভোট ও জামায়াতকানা প্রশাসনের ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে শিবিরকে জেতানো হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে শুধু সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ভোটে জামায়াত-শিবিরের বিজয় বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “মুক্ত বুদ্ধি ও চিন্তা এবং মুক্তিযুদ্ধসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের সুতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়। অথচ এবার ডাকসু নির্বাচন করা হয়েছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নির্বাচনের মতো। যে কারণে ঢাকা ইউনিভার্সিটির জামায়াত-নিয়ন্ত্রিত ও প্রভাবিত ভিসিসহ প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ দূরে থাক, ডাকসু নির্বাচন ইঞ্জিনিয়ারিং করে ফলাফল শিবিরের পক্ষে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। জামায়াত-শিবির প্রভাবিত ভিসিসহ প্রশাসনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়—এটা জেনেও নির্বাচনে যাওয়া ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঠিক ছিলো কী না, সেটাও প্রশ্নের দাবী রাখে।”

তিনি আরও বলেন, “গণশত্রু ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসতে ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারা জানে না, বাংলাদেশের জনগণ তাদের সন্তানদের হত্যাকারীদের আর কখনো গ্রহণ ও ক্ষমা করবে না। আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সখ্যতা দীর্ঘ দিনের। তারা একে অপরের মাসতুতো ভাই। এরশাদের স্বৈরাচারকে বৈধতা দিতেও বাংলাদেশের স্বৈরাচারের জন্মদাতা আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত একসাথে নির্বাচন করেছিল। ক্ষমতার লোভে জামায়াত বিপদের দিনে তাদের পাশে থেকে সুরক্ষা দেওয়া বিএনপির হাত ছেড়ে, তাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়ে হত্যাকারী আওয়ামী লীগের রক্তমাখা হাত ধরতেও কুণ্ঠিত হচ্ছে না।”

ভবিষ্যতে অশুভ শক্তির যড়যন্ত্র মোকাবিলায় আত্ম-উপলব্ধির মাধ্যমে কৌশল ও করণীয় নির্ধারণে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি মহিলা দলের নেতাকর্মীদের প্রতি ঘরে ঘরে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দিয়ে ধানের শিষের প্রচারণা শুরু করার এবং জামায়াতের মহিলা কর্মীদের বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন