বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭২’র সংবিধান টিকিয়ে রাখতে মরিয়া বিএনপিও: শায়খে চরমোনাই

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
‘স্বাধীনতার পথরেখা – ৪৭, ৭১, ২৪: প্রেক্ষিত আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন ফয়জুল করীম।
expand
‘স্বাধীনতার পথরেখা – ৪৭, ৭১, ২৪: প্রেক্ষিত আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন ফয়জুল করীম।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ বিদেশি প্রভাবের কাছে নতি স্বীকার করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই)।

শনিবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্বাধীনতার পথরেখা—৪৭, ৭১, ২৪: প্রেক্ষিত আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগ ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরও প্রকৃত অর্থে মানুষের স্বাধীনতা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তিনি মনে করেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামী ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠন, যা এখনো অর্জিত হয়নি।

তার ভাষায়, “দেশে নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন না এলে শুধু সরকার বা দলের পরিবর্তনে সাধারণ মানুষের জীবনে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে না।”

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি—সব সরকারের সময়ই জনগণ নানা রকম বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন নৈতিক ও আদর্শিক পরিবর্তন, যা ইসলামি মূল্যবোধের মাধ্যমেই সম্ভব।

শায়খে চরমোনাই বলেন, “১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক দেশভাগের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়নি। ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে আমরা লড়েছিলাম, কিন্তু আজও দেশ জুলুম ও অবিচারের শিকার।”

তিনি তরুণ সমাজকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “অন্যায়ের মোহ থেকে সরে এসে সত্য ও ন্যায়ের পথে ফিরতে হবে। কেবল নীতির পরিবর্তনই সমাজে প্রকৃত মুক্তি আনতে পারে।”

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমদ সাকীর।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুল মোমেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ইফতেখার তারিক এবং ব্র্যাকের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ফারহান বাশার।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মুফতি জাহিদুজ্জামান, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ইসলামী যুব সমাদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ খান ও ইসলামী যুব মজলিসের সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সাব্বির আহমদ।

গাজী আতাউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে রাখতে বিদেশি শক্তিগুলো সক্রিয়। অথচ আমাদের শাসকগোষ্ঠী বারবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে—এটাই জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।”

তিনি আরও যোগ করেন, “৭২ সালের সংবিধান দেশের সংকটের মূল কারণ। ভারতের স্বার্থরক্ষাকারী এই সংবিধান টিকিয়ে রাখতে বিএনপিও এখন ব্যস্ত। তাই ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রে মৌলিক সংস্কার ছাড়া কোনো অর্থবহ নির্বাচন সম্ভব নয়।”

সভাপতির বক্তব্যে আতিকুর রহমান মুজাহিদ বলেন, “১৯৪৭, ১৯৭১ এবং আগামীর বাংলাদেশ—এই তিনটি অধ্যায় আমাদের স্বাধীনতার পথনির্দেশক। ইসলামি মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণ প্রজন্মকে ন্যায়ের সমাজ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন