

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনের সময় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শত শত তরুণ, শ্রমিক এবং জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা মানুষ ‘জলবায়ু ধর্মঘট ২০২৫’-এ অংশ নিয়ে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের দাবি জানায়।
আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের বর্তমান জীবাশ্মনির্ভর জ্বালানি পরিকল্পনা (আইইপিএমপি) পুনর্বিবেচনা করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে দ্রুত ও সমতা-ভিত্তিক রূপান্তর এখন সময়ের দাবি।
এছাড়া মানুষ ও পৃথিবী সুরক্ষায় দ্রুত, ন্যায়সংগত ও অর্থায়ন-নির্ভর জ্বালানি রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন জলবায়ু কর্মীরা।
ইয়ুথনেট গ্লোবাল, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর জাস্ট ট্রানজিশন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই ধর্মঘটটি বৈশ্বিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে।
ধর্মঘট পালনকারীরা বাংলাদেশে ভুয়া ও জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর সমাধান প্রত্যাখ্যান করে বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তিতে রূপান্তর হতে হবে মানুষকেন্দ্রিক, মুনাফাকেন্দ্রিক নয়।
তারা বলেন, একটি বাস্তব ন্যায্য রূপান্তর জীবিকা সুরক্ষা, লিঙ্গ সমতা, শ্রমিক অধিকার রক্ষা এবং জলবায়ু সিদ্ধান্তগ্রহণে তরুণ, শ্রমিক ও ফ্রন্টলাইন সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অংশগ্রহণকারীরা সরকারকে সৌর ও বায়ু শক্তিতে স্বচ্ছতা, সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ ও ন্যায্যতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশের কপ৩০ যুব প্রতিনিধি সোহানুর রহমান বলেন, ন্যায্য রূপান্তর মানে দূষণ থেকে সমাধানের পথে যাওয়ার সময় কাউকে পেছনে ফেলে না রাখা। এই ধর্মঘটের মাধ্যমে তরুণ ও শ্রমিকেরা এক কণ্ঠে বলছে—আমরা চাই কর্মসংস্থান, ন্যায়বিচার ও মর্যাদার ভিত্তিতে গড়া ভবিষ্যৎ।
তিনি আরও বলেন, কর্মীরা তাদের ‘মিথ্যা’ এবং জীবাশ্মভিত্তিক সমাধান হিসেবে বর্ণনা করেছে যা প্রত্যাখ্যান করেছেন; পরিবর্তে তারা সৌর ও বায়ু বিদ্যুতে স্বচ্ছ বিনিয়োগ, পরিকল্পনায় ক্ষতিগ্রস্থ সম্প্রদায়ের সম-অংশগ্রহণ, এবং অনুদানভিত্তিক জলবায়ু অর্থায়নের ন্যায্য প্রবেশাধিকার দাবি করছেন।
বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক একেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ফ্রন্টলাইনে। বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট ২০২৫-এ আমরা দাবি করছি এমন এক ন্যায্য রূপান্তর, যা শ্রমিকদের সুরক্ষা দেবে, সামাজিক সুরক্ষা বাড়াবে এবং জলবায়ু অর্থায়ন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছাবে। কপ৩০ চলাকালীন শ্রমিকদের জন্য জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে কাউকে পেছনে ফেলে নয়।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ন্যায্য রূপান্তর অবশ্যই অর্থনৈতিক, লিঙ্গ ও শ্রমিক ন্যায়বিচারকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং কাউকে পেছনে ফেলে যাওয়া চলবে না। তারা বিশ্বব্যাপী সংহতির আহ্বান জানান, যাতে কপ৩০ সরকার ও কর্পোরেশনকে জবাবদিহির আওতায় এনে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ, তরুণ ও শ্রমিকদের জন্য বাস্তব অগ্রগতি নিশ্চিত করে।
ধর্মঘট শেষে তরুণ জলবায়ুকর্মীরা ও শ্রমিক অধিকার সংগঠকরা বৈশ্বিক জলবায়ু আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান এবং কপ৩০ নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানান—একটি নবায়নযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অনুদান-সমর্থিত বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে, যা অভিযোজন বাড়াবে, ক্ষতিপূরণ অর্থায়ন কার্যকর করবে এবং মানবাধিকার, শ্রমিক মর্যাদা ও আন্ত-প্রজন্মগত সাম্যের ভিত্তিতে একটি ন্যায্য রূপান্তর অগ্রসর করবে।
মন্তব্য করুন
