

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে ভিশনের এসি বিস্ফোরণে এই দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন দগ্ধ হয়। এর মধ্যে হাসপাতালে মুত্যুর সাথে লড়াই করে পাঁচদিন পর করুণ মৃত্যু হয় তুহিন হোসেনের (৩৮)। একই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হন তুহিন হোসেনের স্ত্রী ইভা আক্তার ও তার দুই সন্তান।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে সার্ভিসিং করার পরেও ভিশন এসিতে গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের এইচডিইউতে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
ডা. শাওন বিন রহমান জানান, তুহিনের শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তাকে এইচডিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানেই মারা গেছেন তিনি।
এদিকে, তুহিনের স্ত্রী ইভা ৮ শতাংশ, দুই ছেলে তাওহীদ ১৫ শতাংশ এবং তানভীর ৪৭ শতাংশ দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তুহিন হোসেন রাজধানীর মতিঝিলের মোতালেব প্লাজায় একটি মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে কাজ করেন। তাদের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলায়। সেদিন রাতে তুহিন হোসেন ও তার স্ত্রী ইভা আক্তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ এসি বিস্ফোরিত হয়ে ঘরে আগুন ধরে যায়। এতে দগ্ধ হোন মো. তুহিন হোসেন (৩৮), তার স্ত্রী ইভা আক্তার (৩০) এবং দুই সন্তান তাওহীদ (৭) ও তানভীর (৯)।
পরে দগ্ধদের রাতেই প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ারা উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। সে সময় চারজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর ভাই মো. মাহিন এনপিবি নিউজকে বলেন, ভিশনের এসিটা মধ্যরাতে বোমের মতো বিস্ফোরণ হয়। এরপরে সারা ঘরে আগুন ধরে যায়। এসিটি ১৫ দিন আগেও সার্ভিসিং করা হয়েছিল। তারপরেও এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া, এতো বড় একটি ঘটনা ঘটেছে তবুও ভিশন থেকে এখনো কেউ আসেনি দগ্ধ পরিবারটিকে দেখতে। পরিবারের বাকি সদস্য যারা দগ্ধ তাদের নিয়ে এখন দুশচিন্তার মধ্যে আছি।
তিনি আরও বলেন, মানুষ এসি কিনে শান্তির জন্য। কিন্তু যদি এই শান্তি কাল হয়ে দাড়ায় ভিশনের মতো এসি কিনে। তাছাড়া, আমরা ভিশনের নামে মামলা করবো। আমার ভাইকে হারিয়েছি। কিন্তু ভিশনের এসি কিনে যেন আর কেউ না মারা যায়, সে বিষয়টি সরকারের দেখা উচিত।
এদিকে জানা গেছে, বিস্ফোরিত হওয়া এসিটি দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও ভিশন ইলেকট্রনিক্স এর ভিশন ব্রান্ডের এসি।
ভিশন ব্রান্ডের এসি বিস্ফোরিত ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ডেপুটি মার্কেটিং ম্যানেজার মনজুরুল খান মিনার বলেন, আমি এই বিষয়ে কথা বলার কেউ না। তিনি এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সিনিয়র পাবলিক রিলেশন অফিসার মোঃ তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ জানান।
তবে মো. তৌহিদুজ্জামানের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে এই ঘটনা ছড়িয়ে পরেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে ভিশন এসি নিয়ে মানুষের বিরুপ মন্তব্য দেখা যায়। অচিরেই বাজার থেকে নিম্নমানের এসব এসি তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছে জনসাধারণ।
মন্তব্য করুন