

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


হাসি আমাদের জীবনের পরিচিত একটি অংশ হলেও এর পেছনের বিজ্ঞান ও সামাজিক তাৎপর্য বেশ গভীর। মানুষ কেবল আনন্দ পেলেই হাসে না; বরং শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক নানা প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে হাসি সৃষ্টি হয়।
১. মস্তিষ্কের রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া
হাসির সময় মস্তিষ্কে এমন কিছু রাসায়নিক ছাড়া হয় যা শরীরে স্বস্তি ও ভালো লাগার অনুভূতি আনে। ডোপামিন ও এন্ডোরফিন নিঃসরণের ফলে মেজাজ ভালো হয় এবং ব্যথা কম অনুভূত হয়। এই রাসায়নিক পুরস্কার ব্যবস্থা হাসিকে আরও স্বতঃস্ফূর্ত এবং আরামদায়ক করে তোলে।
২. স্বয়ংক্রিয় শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া
হাসি সব সময় চিন্তাভাবনা করে করতে হয় না। মস্তিষ্কের কিছু অংশ (যেমন বেসাল গ্যাংলিয়া) এমনভাবে কাজ করে যে ইচ্ছাকৃত নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও হাসি বেরিয়ে আসে। তাই অনেক সময় আমরা হঠাৎ করেই হাসতে শুরু করি।
৩. সামাজিক কারণ: যোগাযোগের অদৃশ্য ভাষা
মানুষ সাধারণত অন্যদের সঙ্গে থাকলে অনেক বেশি হাসে। এর কারণ—সম্পর্ক গড়ে তোলা: হাসি বন্ধুতা, ঘনিষ্ঠতা এবং সামাজিক সংযোগ বাড়ায়। উত্তেজনা কমানো: তর্ক বা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে হাসি পরিবেশকে হালকা করতে সাহায্য করে।
সামাজিক ইঙ্গিত: গবেষণায় দেখা যায়, সামাজিক অবস্থানে যাদের প্রভাব বেশি তারা তুলনামূলক কম হাসেন; আর নিম্ন অবস্থানের মানুষ বেশি হাসেন যাতে তারা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন।
৪. মানসিক স্বাস্থ্যে হাসির ভূমিকা
হাসি মানসিক প্রশান্তির একটি শক্তিশালী উপায়। স্ট্রেস কমানো: কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে হাসি মনকে শান্ত করে। মেজাজ উন্নয়ন: ইচ্ছা করে হাসলেও শরীর ইতিবাচক সংকেত পায়, ফলে মন ভালো হয়ে যায়। ভয় ও ব্যথা থেকে মন সরানো: হাসি ব্যথা বা ভয়ের মুহূর্তে সাময়িক স্বস্তি দেয়।
৫. ভাষার বাইরের এক যোগাযোগ
হাসি একটি শব্দ হলেও এর মাধ্যমে অনেক ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করা যায়। এটি ব্যঙ্গ, আন্তরিকতা, খুশি বা মজা—সবই বোঝাতে পারে। কোনো বক্তব্য গুরুতর নয় বা হালকা মেজাজে বলা হয়েছে—এটি জানাতেও হাসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাসি মানুষের জীবনে শুধু আনন্দের উৎস নয়—এটি আমাদের শরীরকে ভালো রাখে, মনকে হালকা করে এবং মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করে। জীবনের নানা টানাপোড়েনেও হাসি এক ধরনের প্রাকৃতিক নিরাময়।
মন্তব্য করুন

