শুক্রবার
২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা ঘিরে ট্রাইব্যুনালে উত্তেজনা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
ছবি সংগৃহীত
expand
ছবি সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রাজসাক্ষী এসআই শেখ আবজালুল হকের জেরা চলাকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। জেরা পর্যায়ের একটি প্রশ্নকে কেন্দ্র করে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে প্রসিকিউশন এবং স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনাল–২ এর বিচারিক প্যানেল—অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর—এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার পর মামলার ১৬ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসা রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা শুরু হয়। জেরার একপর্যায়ে ডিফেন্স আইনজীবী গত বছরের ৫ আগস্ট কোনো পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিলেন কি না—এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, থানার কেউ না মারা গেলেও অন্য ইউনিটের একজন নিহত হয়েছিলেন। এই প্রশ্নে আপত্তি তোলে প্রসিকিউশন, যা থেকেই দীর্ঘ তর্কাতর্কির সূত্রপাত।

মঙ্গলবার ২৩তম সাক্ষী হিসেবে আবজালুলের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। অনেক তথ্য এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠলেও প্রসিকিউশন বলছে—সাক্ষী তার জানা তথ্যই আদালতে তুলে ধরেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে সাক্ষ্য দিতে এসে তিনি জানান, ৫ আগস্ট থানার সামনে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনাটি তিনি নিজ চোখে দেখেননি; ১৫ আগস্ট থানায় অস্ত্র–গুলি জমা দিতে গিয়ে অন্যের কাছে শুনেছিলেন যে ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ এ কাজে যুক্ত ছিলেন। সাক্ষ্য শেষে তিনি আদালতের কাছে দুঃখও প্রকাশ করেন।

এ মামলায় চলতি বছর ২১ আগস্ট ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। উপস্থিত আটজন আসামির মধ্যে সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন, আর এসআই আবজালুল দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন জানান। পরে তার দোষ স্বীকারোক্তি রেকর্ড এবং রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

গত কয়েক দফায় মামলার অন্যান্য সাক্ষীরাও হত্যাকাণ্ডের বিবরণ হাজির করেছেন—গুলিবিদ্ধ হওয়া ভুক্তভোগী সানি মৃধা, প্রত্যক্ষদর্শী শাহরিয়ার সজিব, শহীদ সাজ্জাদ ও সাবুরের স্বজনরা, এবং জব্দতালিকার সাক্ষী পুলিশ সদস্যরা প্রত্যেকে সেই দিনের নৃশংসতার ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট নথিতে ৩১৩ পৃষ্ঠা তথ্য, ৬২ জন সাক্ষী, ১৬৮ পৃষ্ঠা দালিলিক প্রমাণ এবং দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে আট আসামি কারাগারে থাকলেও সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন এখনো পলাতক।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন এবং পরে তাদের মরদেহ ভ্যানে তুলে আগুনে পোড়ানো হয়। তখন একজন জীবিত থাকলেও তাকেও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এর পরই মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন