

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঘাড়ে ব্যথা আধুনিক জীবনযাত্রার একটি সাধারণ সমস্যা। দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার, সঠিক ভঙ্গি না মেনে বসা, মানসিক চাপ এবং বয়সজনিত কারণে ঘাড়ের পেশীতে চাপ সৃষ্টি হয়।
প্রাথমিকভাবে এটি সাময়িক অস্বস্তি মনে হলেও চিকিৎসা না নিলে দীর্ঘমেয়াদে জটিল সমস্যায় রূপ নিতে পারে। সঠিক জীবনধারা, ফিজিওথেরাপি ও নিয়মিত ব্যায়াম ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ঘাড় ব্যথার প্রধান কারণ:
১. দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার ২. অতিরিক্ত ঝুঁকে কাজ করা বা ভারী জিনিস তোলা ৩. ঘাড়ের পেশীতে টান বা দুর্বলতা ৪. দুর্ঘটনা বা খেলাধুলার আঘাত ৫. দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং বা স্থির ভঙ্গিতে থাকা ৬. খুব উঁচু বা শক্ত বালিশে ঘুমানো ৭. মানসিক চাপ ও টেনশন ৮. সারভাইকাল স্পন্ডাইলোসিস – ডিস্ক ক্ষয় ও মেরুদণ্ডের স্পেস সংকুচিত হওয়া ৯. ডিস্ক হার্নিয়েশন ১০. সংক্রমণ – মেনিনজাইটিস, টিউবারকুলোসিস ১১. টিউমার বা ক্যান্সার – ঘাড়ের হাড় ও পেশীতে হলে ১২. হৃদরোগ – হৃদরোগজনিত কারণে ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে
ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধের সহজ নিয়ম
সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন: বসা, দাঁড়ানো বা হাঁটার সময় মেরুদণ্ড ও ঘাড় সোজা রাখুন।
একটানা বসবেন না: প্রতি ৩০–৪০ মিনিট অন্তর উঠে হাঁটুন বা হালকা স্ট্রেচ করুন।
স্ক্রিনের অবস্থান ঠিক করুন: কম্পিউটার ও মোবাইল চোখের সমতলে রাখুন।
বালিশের উচ্চতা: একটি মাঝারি উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করুন, খুব উঁচু বা শক্ত বালিশ থেকে বিরত থাকুন।
গরম ও ঠান্ডা সেঁক: আঘাতজনিত ব্যথায় প্রথম ২৪ ঘণ্টা বরফ সেঁক, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় সহনীয় মাত্রার গরম সেঁক ব্যবহার করুন। সেঁক সরাসরি ত্বকে না দিয়ে পাতলা কাপড়ে মুড়ে ব্যবহার করুন।
ভারী জিনিস বহন এড়িয়ে চলুন: এক কাঁধে নয়, দুই কাঁধে সমানভাবে ভাগ করে নিন।
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৬–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ: শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ও মানসিক চাপ কমানোর কৌশল ব্যবহার করুন।
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম
ঘাড় ডানে-বামে ঘোরানো: ধীরে ঘাড় ডানদিকে এবং বামদিকে ঘোরান, ১০ বার পুনরাবৃত্তি।
ঘাড় পাশের দিকে ঝুঁকানো: মাথা ডান কাঁধের দিকে, তারপর বাম কাঁধের দিকে ধীরে ঝুঁকান, উভয় দিক ১০ বার করুন।
কাঁধ উঠানো-নামানো: দুই কাঁধ একসাথে কানের দিকে তুলুন, ধীরে নামান, ১০–১৫ বার পুনরাবৃত্তি।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে
ব্যথা হাতের দিকে ছড়িয়ে গেলে
হাতে অবশভাব বা দুর্বলতা দেখা দিলে
মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা
লেখক পরিচিতি: কনসালট্যান্ট ফিজিওথেরাপি, প্রিমিয়ার ফিজিওথেরাপি কনসালটেশন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
মন্তব্য করুন