বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাজিদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে: ইবি ছাত্রদল আহ্বায়ক

ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
ফাইল ছবি
expand
ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই একটি চক্র শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইবি ছাত্রদল আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ‘জাস্টিস ফর সাজিদ’ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজিত ‘সাজিদ হত্যার ৯০তম দিন, বিচার বিলম্বিত হওয়া প্রতিবাদ’ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

সাহেদ আহম্মেদ কর্মসূচিতে বলেন,

“এই হত্যাকাণ্ডের ৯০ দিন অতিক্রম হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসন কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখানে ব্যর্থ হয়েছে। সাজিদের খুনিরা যখন গ্রেফতার হবে, তখনই আমরা প্রশাসনকে সফল বলব।”

তিনি আরও বলেন,

“আমরা সাজিদের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক সংগঠনের শিক্ষার্থীরা সকলেই তাদের অবস্থান থেকে এই আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ—যাতে পুলিশ প্রশাসন খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সামনে নিয়ে আসে।”

ইবি শিক্ষার্থী বুরহান উদ্দিন বলেন,

“জুলাই মাসের ১৭ তারিখে সাজিদের লাশ আমরা পুকুরে পাই। পরবর্তীতে ডাক্তারের মেডিকেল রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায় হত্যার প্রকৃতি। আজ তার ৯০তম দিন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নব্বই দিন পার হলেও প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং যত দিন যাচ্ছে, মনে হচ্ছে সাজিদ হত্যার ইস্যুটা ধামাচাপা পড়ছে।”

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল রাহাত বলেন,

“৯০ দিন অতিক্রম হলেও প্রশাসন এখনো কোনো খোঁজ খবর পাননি। আজকের এই অভিনব প্রতিবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘এরপর আর কেউ টার্গেট আছে কি না?’ এটি আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন। আমরা সাজিদ হত্যার বিচারের দাবি জানাই।”

ইবি শিক্ষার্থী ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন,

“আজ একটি বোর্ড প্রদর্শন করা হয়েছে যা দেখাচ্ছে সাজিদ হত্যার বিচার কতটা বিলম্বিত হচ্ছে। এই সতর্কতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, তা কতদিন চলবে? কতদিন পরে সাজিদের হত্যার বিষয়টি সবার সামনে আসবে? কতদিন পরে আমরা বিচার পাব? এই সংশয় থেকেই আজ আমাদের এই কার্যক্রম।”

তিনি আরও বলেন,

“আমরা প্রতিদিন বোর্ডে থাকা তারিখ পরিবর্তন করব। প্রতিদিন আমাদের কার্যক্রমে সংখ্যাটি বাড়বে—এক সংখ্যা থেকে দুই, দুই থেকে তিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন দেখবে যে সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, তখনই তারা বুঝবে সাজিদ হত্যার পিছনে কতটুকু ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র, কালক্ষেপণ ও নিরাপত্তাহীনতার বিষয়গুলো সকলের সামনে তুলে ধরতেই আমরা এখানে সমবেত হয়ে এই বোর্ড উপস্থাপন করেছি।”

উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন সাজিদ আবদুল্লাহ। গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হলের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল) পুকুর থেকে সাজিদের লাশ ভাসতে দেখা যায়, যা পরে একদল শিক্ষার্থী উদ্ধার করেন।

পরবর্তীতে ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, সাজিদকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং পরে মৃতদেহ পানিতে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে এই মামলাটি সিআইডির কাছে তদন্তাধীন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন