

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সকাল তখন সাতটা। কুয়াশা আর হালকা রোদ মিশে তৈরি করেছে এক শান্ত সকাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তখন ভিড় জমেছে সমাজকর্ম বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের। সবাই একে একে বাসে উঠছে, মুখে শাপলার রাজ্যে যাওয়ার উচ্ছ্বাস।
বাস ছাড়তেই শুরু হলো আনন্দের রোল। কেউ জানালার পাশে বসে গান গাইছে, কেউ সেলফিতে ব্যস্ত। সকালের নাস্তা সারলাম বাসেই। প্রায় আড়াই ঘণ্টার পথ পেরিয়ে অবশেষে পৌঁছালাম সেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য সিলেটের জৈন্তাপুরের শাপলা বিলে।
নেমে দেখি, চোখের সামনে এক অপার সৌন্দর্য। যতদূর দেখা যায়, জলে ভাসছে লাল শাপলা। বাতাসে ভাসছে বিশুদ্ধতার ঘ্রাণ। মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়ে রেখেছে এই বিলকে আমাদের জন্যই। আমরা চারটি নৌকা ভাড়া করলাম। তারপর শুরু হলো বিল ভ্রমণ। নৌকা ভেসে চলছে জলের বুকে, শাপলার ফাঁকে ফাঁকে। বিজয়া গাইছে একের পর এক গান, কেউ আবার নিঃশব্দে তাকিয়ে আছে মুগ্ধতায় ভরা চোখে।
শাপলার রাজ্যে বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে রওনা দিলাম রাং পানির দিকে। জায়গাটা জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি এলাকার অনাবিষ্কৃত এক স্বর্গ। চারপাশে পাহাড়, বন আর চা-বাগানের সবুজে মোড়ানো পরিবেশ। দুপুরের খাবার সেখানেই খাওয়া হলো। এরপর কেউ হাঁটছে পাহাড়ের পাদদেশে, কেউ বসে আছে পাথরের চূড়ায়।
দিনের শেষ গন্তব্য ছিল জৈন্তা হিল রিসোর্ট। সেখানে গিয়ে যেন আনন্দটা আরও বেড়ে গেল। সবাই মিলে খেললাম বাস্কেটবল। হাসি, উল্লাসে মুখরিত হয়ে উঠল চারপাশ। খেলায় প্রথম হলো শিহাব, দ্বিতীয় মাসুমা, আর তৃতীয় তুশি। খেলা শেষে আমরা বসে গল্প করলাম, গান গাইলাম।
সূর্য যখন পাহাড়ের পেছনে হারিয়ে গেল, তখন বাসের জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছিল নরম আলোয় ঢেকে যাওয়া সিলেটের সবুজ প্রকৃতি। ফিরতি পথে কেউ চুপচাপ, কেউ এখনো গুনগুন করছে। কারও মুখে তখন একটাই কথা, “এই সৌন্দর্য ছেড়ে যেতে মন চায় না।”
একদিনের এই ভ্রমণটা যেন থেকে গেল হৃদয়ে। বন্ধুত্ব, প্রকৃতি আর স্মৃতির মিশেলে সাজানো এক মায়াময় দিন। যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর গল্পগুলোর একটি হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন