শনিবার
০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে ছাত্রদল নেতার বৃক্ষরোপণ, সমালোচনা

জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
ছাত্রদল নেতার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ কর্মীর অংশগ্রহণ
expand
ছাত্রদল নেতার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ কর্মীর অংশগ্রহণ

জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবিপ্রবি) ছাত্রদলের এক নেতার আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দুই শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণকে ঘিরে ক্যাম্পাসে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে ছাত্রসমাজে সৃষ্টি হয়েছে নানা গুঞ্জন ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র হলের মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত ওই কর্মসূচিতে আগাছা নিধনের কীটনাশক প্রয়োগ ও ফুলগাছ রোপণ করা হয়। আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন জিকু তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, এটি শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচি, যেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আমির হামজা ও মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন।

তবে পোস্টে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সমাজকর্ম বিভাগের দুই শিক্ষার্থী—মো. আসমাউল হাসান ও মো. মোবাশ্বির হাসান—ওই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে একে “ছাত্রলীগ কর্মীদের সুকৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা” বলে মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে আয়োজক শাখাওয়াত হোসেন জিকু বলেন, “ওরা দুজন ফ্রেশার থাকা অবস্থায় নিজেদের অজান্তে ছাত্রলীগের কমিটিতে যুক্ত হয়েছিল। পরে বিষয়টি বুঝে পদত্যাগ করে। আসমাউল ৬ জুলাই এবং মোবাশ্বির ১৬ জুলাই ২০২৪ সালে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়েছে।” তবে যাচাই করে দেখা গেছে, আসমাউলের ফেসবুক আইডিতে ওই তারিখে পদত্যাগসংক্রান্ত কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি।

জিকু আরও বলেন, “ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, কেউ যদি ছাত্রলীগ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করে, তাকে সংগঠনে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এই কর্মসূচি কেন্দ্রীয় নয়, বরং হল কমিটিতে পদ প্রত্যাশীদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল।”

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব যীনাত মিয়া আজিজুল বলেন, “এই কর্মসূচি সম্পর্কে আমি অবগত নই। কেন্দ্র থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে— ছাত্রলীগের কমিটিভুক্ত কাউকে যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ছাত্রদলকে ক্লিন রাখতে কাজ করছি। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত কাউকে কোনো কমিটিতে স্থান না দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও বহাল আছে।”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশের অভিযোগ, রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সংগঠন আড়ালে দলীয় কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এতে ক্যাম্পাসের পরিবেশ আবারও রাজনীতিকরণের দিকে ঝুঁকছে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন