

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস–২০২৫। রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সিনেট ভবনের সামনে থেকে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সকাল ১১টায় সিনেট ভবনে শিক্ষক সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মো. ফরিদ উদ্দিন খান। সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন।
অনুষ্ঠানের সমন্বয় ও পরিচালনা করেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক এবং উদ্যাপন কমিটির সদস্য–সচিব প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজার ছুটি ও কিছু অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ে দিবসটি পালন করা সম্ভব হয়নি। তবে আজ তিন পর্বে—শোভাযাত্রা, শিক্ষক সম্মাননা প্রদান ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে আমরা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করছি।”
দিবস উপলক্ষে তিনজন শিক্ষককে ‘শিক্ষক সম্মাননা’ প্রদান করা হয়। তারা হলেন—ড. মু. আযহার উদ্-দীন, ড. এম নজরুল ইসলাম ও ড. মামনুনুল কেরামত। উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয় ও ফুলেল তোড়া তুলে দেন।
সম্মাননা প্রাপ্ত প্রফেসর ড. এম নজরুল ইসলাম বলেন, “ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় শিক্ষকরা জিজ্ঞেস করতেন, ‘কি হতে চাও?’ আমি বলতাম, ‘বিএ পাস করতে চাই।’ আজ আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে শিক্ষকের গর্ব তার নিজের নয়—তার শিক্ষার্থীর সাফল্যে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “পৃথিবীতে এমন কোনো সফল মানুষ নেই যার পেছনে একজন শিক্ষক নেই। শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলেন ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। আজ যাঁদের সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সত্যিই এই মর্যাদার উপযুক্ত।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “একজন শিক্ষক—শিক্ষকই। এর চেয়ে বড় পরিচয় আর কিছু হতে পারে না। অত্যন্ত সৌভাগ্যবানরাই এই মহৎ পেশায় আসতে পারেন।”
হাস্যরসের ছলে তিনি বলেন, “আমি জীবনে কখনো ‘এইম ইন লাইফ’ রচনা লিখিনি। তবে একসময় বাস ড্রাইভার হওয়ার প্রবল ইচ্ছে ছিল।”
বর্তমান শিক্ষক–শিক্ষার্থী সংকট প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “এই সংকট আসলে শিক্ষার সংকট। আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।” তিনি তার সাবেক শিক্ষক ড. এম নজরুল ইসলামের প্রশংসা করে বলেন, “স্যার গ্রাফের মাধ্যমে পড়াতেন—যা ছিল অত্যন্ত কার্যকর। কারণ, একটি ছবি হাজার শব্দের চেয়েও শক্তিশালী।”
আলোচনা শেষে রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধার আবহ বিরাজ করছিল।
মন্তব্য করুন