

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের অপতৎপরতা ও নাশকতার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু) ছাত্রদল ও ছাত্রশক্তি ।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও বটতলায় মানববন্ধন করেছে সংগঠন গুলো।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অপতৎপরতা বিরুদ্ধে রাত নয়টায় বিক্ষোভ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, বিক্ষোভ মিছিল টি এমএইচ গেইট থেকে ডেইরি গেইট হয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের বটতলা হয়ে রবীন্দ্র চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। একই সময় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে জাতীয় ছাত্রশক্তি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
এদিকে রাত দশটায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)। বিক্ষোভে তারা প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ফটকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিবাদ ও জুলাইয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার দাবি করে।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘ছাত্রলীগের চামড়া তুলে দেবো আমরা’, ‘আলিফ-শ্রাবন যেই গেটে, ছাত্রলীগ কেনো সেই গেটে, বিচার বিচার বিচার চাই, ছাত্রলীগের বিচার চাই','আমার ভাই কবরে' খুনি কেনো বাহিরে' প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মিছিল শেষে জাকসুর সাধারন সম্পাদক (জিএস) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে আওয়ামীলীগ তার রক্তপিপাসু রুপ দেখানোর মাধ্যমে তাদের ফ্যাসীবাদি যাত্রা শুরু করেছিল। তারপর নয় সালের পীলখানা হত্যাকান্ড, তেরো'র গণহত্যা, এবং ২৪ এর গণহত্যার মাধ্যমে সেই ফ্যাসিবাদী রক্তপিপাসার সিলিসিলা বজায় রেখেছিল।
আমরা আজ দেখেছি ছাত্রলীগ নামের কিছু কুলাঙ্গার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানারে সামনে এসেছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে সন্ত্রাসীদেরকে আমাদের চব্বিশের শহীদেরা রক্ত দিয়ে নিষিদ্ধ করেছে তারা আজীবন নিষিদ্ধই থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই আপনাদের গাফিলতির কারনেই ছাত্রলীগ আজ নাশকতা পরিকল্পনা করার সুযোগ পাচ্ছে। আপনারা অতিদ্রুত ছাত্রলীগের শেল্টারদাতাদের চিহ্নিত করুন, অপরাধীদের বিচার করুন। অন্যথায় ছাত্রলীগ পুণর্বাসনের দায় আপনাদেরকে নিতে হবে।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজকের এই ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লগি-বইঠা তান্ডবের মাধ্যমে ২০০৬ সালে ফ্যাসিবাদের সূচনা করেছিল।
ঠিক এই দিনেই আবার সেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। এটা আমাদের এবং একইসাথে প্রশাসনের জন্য লজ্জার। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ, ছাত্রলীগ কেয়ামত পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকবে। এ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আর ফেরার কোনো সুযোগ নেই।
জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “জাকসুর আগেও আমরা জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার নিয়ে সোচ্চার ছিলাম, জাকসুতে নির্বাচিত হওয়ার পরেও আমরা বিচারের দাবি থেকে এক চুলও সড়ে আসিনি।
জুলাই হামলার বিচারের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিতে যেসকল শিক্ষক রয়েছেন, তারা যদি জুলাই হামলায় জড়িত শিক্ষকদের বিচার এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা না করেন, তহলে আমরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একশনে যাওয়ার আগে আপনাদের বিরুদ্ধে একশনে যাব।”
এসময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি আর কখনো নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাসের ত্রিসীমানায় কোনো ধরনের কর্মসূচি দেয়ার দুঃসাহস দেখান, তাহলে আপনারা এখান থেকে জীবিত হয়ে মায়ের কোলে ফিরে যেতে পারবেন না।
এখনো আমাদের অনেক মায়ের সন্তান বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে আছেন, অনেক জুলাই যোদ্ধা এখনো হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে, আর আপনারা এখানে মানববন্ধন করার দুঃসাহস দেখান, আপনাদের দুঃসাহসকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করবো আমরা।” শাখা ছাত্রশক্তির নেতা ও জাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আহসান লাবীব বলেন, এনাম ও সোহলের মতো ছাত্রলীগের কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা এই ক্যাম্পাসে প্রধান ফটকের সামনে মিছিল করে কিন্তু প্রক্টর অফিস এ বিষয়ে অবগত না, প্রক্টর অফিস কেনো জানে না নিরাপত্তা অফিস কেনো জানে তাহলে আমরা ধরে নিবো সেই নিরাপত্তা অফিসের ইন্ধনে সেই প্রোগ্রামগুলো হচ্ছে।
আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসের কাজ হলো শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এই নিরাপত্তা অফিসারদের আমরা দেখেছি জুলাই আন্দোলন কারীদের তথ্য ছাত্রলীগের কাছে বিলিয়ে দিতে। আন্দোলন কারীরা কোথায় আছে তাদের সেই তথ্য পৌঁছে দিতো ছাত্রলীগের কাছে যাতে আমরা হামলার শিকার হই সেই ব্যবস্থা নিরাপত্তা অফিসাররা করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের উচিত নিরাপত্তা অফিস থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এই দালালকে সরানো এবং উপাচার্য অফিস থেকে আওয়ামী পান্ডাগুলোকে সরানো।
মন্তব্য করুন