শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থীদের অপতৎপরতা রুখে দেবার অঙ্গীকার’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২১ এএম আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
ঢাবিতে চাঁদাবাজির কারণে চাকরিচ্যুত শামিম, বাম সংগঠনের পক্ষ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ। ছবি: এনপিবি
expand
ঢাবিতে চাঁদাবাজির কারণে চাকরিচ্যুত শামিম, বাম সংগঠনের পক্ষ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ। ছবি: এনপিবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ ও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ অভিযানকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অভিযানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিল্যান্স টিমের সদস্য ওমর ফারুক শাহবাগ থানার সামনে হামলার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, শাহবাগ থানার সামনে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যারিকেড বসানোর সময় একদল যুবক এসে প্রক্টোরিয়াল টিমের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে তাদের ওপর হামলা চালায়।

আহত ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, “শাহবাগ থানার সামনে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। এসময় একদল যুবক এসে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের মধ্যে কিছু শিক্ষার্থীও ছিল।”

অন্যদিকে, একই সময়ে ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও হকারদের একদল বিক্ষোভ মিছিল করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ওই মিছিলে অংশ নেন।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিক ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন উল্লেখ করে ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন, চাকরিচ্যুত সাবেক কর্মচারী শামিম, যিনি অতীতে ক্যাম্পাসে অবৈধ দোকানপাট ও চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাকেই শনিবারের মিছিলে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।

তিনি লিখেছেন, “২০২৩-২৪ সালে আমি ক্যাম্পাসে অবৈধ দোকানপাট ও ভবঘুরে চক্র নিয়ে সিরিজ রিপোর্ট করেছিলাম। তদন্ত কমিটি রিপোর্টের সত্যতা পায় এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়ে ওই সন্ত্রাসী কর্মচারী শামিমকে চাকরিচ্যুত করে। আজ সেই ব্যক্তিকেই আবার মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।”

বাম সংগঠনগুলোর এই অবস্থানকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রশ্ন তুলেছেন, ক্যাম্পাসে অবৈধ ব্যবসা ও বহিরাগত চক্রের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কোনো সংগঠনের জন্য আদৌ সমীচীন কি না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেয়াদুল ইসলাম যুবাহ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “ডাকসু ও প্রশাসনের উদ্যোগে ‘মাদকমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস নির্মাণ’ অভিযানের সময় লাল পতাকার বাম সংগঠনের কিছু সদস্য বহিরাগত এনে প্রটিউরিয়াল সিকিউরিটি দলের ওপর হামলা চালিয়েছে। বাম পতাকার আড়ালে ক্যাম্পাসে অশ্লীলতা, মাদক ও বহিরাগত সন্ত্রাসের আশ্রয় তৈরি করা হয়েছে।”

তিনি আরও লেখেন, “যতদিন এ সিন্ডিকেট ভাঙা না যাবে, ততদিন আমরা অনিরাপদ থাকবো। সাম্যের মতো শিক্ষার্থীরা চুরিকাঘাতে অকালে প্রাণ দিতে থাকবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী কাজী এইচ হক রায়হান তার পোস্টে লিখেছেন, “সাম্য হত্যার দায় এই বামদের নিতে হবে। ক্যাম্পাস কেবল শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের জন্য। এখানে বাইরের মানুষের মাদক ব্যবসা চলতে দেওয়া যাবে না। যদি কেউ মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় দেয়, তবে প্রশ্ন উঠবে কেন তাকে বহিষ্কার করা হবে না?”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মেস্কাত মন্তব্য লিখেছেন , “ডেন্ডি, ইয়াবা, গাজা না খাইলে মনে হয় বাম নেশাখোরদের মাথা ঠিক থাকে না। গত ৩-৪ দিন ক্যাম্পাসে এসব মাদক না পেয়ে তারা আজ ডিলারদের নিয়েই মিছিল করছে। মাদক বিক্রেতাদের ক্যাম্পাস থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ বি জুবায়েরের প্রতি সমর্থন জানাই।”

এ সময় অন্য এক পোস্টে তিনি লেখেন, “এরা মূলত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় বিঘ্ন না ঘটিয়ে শান্তি পায় না।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন