বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না: জোবায়েদকে হত্যার আগে বর্ষা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০২ পিএম আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
বিশেষ মুহূর্তে বর্ষা-মাহির। ডানে ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ
expand
বিশেষ মুহূর্তে বর্ষা-মাহির। ডানে ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী জানিয়েছেন, হত্যার সময় জোবায়েদ এখনও বেঁচে ছিলেন।

বাঁচার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি দুই তলা থেকে উপরের তলায় উঠেন। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বর্ষা।

জোবায়েদ বর্ষাকে বলেছিলেন, “আমাকে বাঁচাও।” কিন্তু বর্ষা তার উত্তর দেন, “তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না।” এরপর বর্ষা জোবায়েদকে হত্যা করেন।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিসি মল্লিক আহসান এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “মেয়েটি অনেক চালাক। দুই দিকের সম্পর্কই বজায় রাখে। এটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা, মিন্নির ঘটনার কাছাকাছি।”

ওইদিন সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এই হত্যাকাণ্ড বর্ষা ও মাহীরের পরিকল্পিত।

বর্ষার মাহীরের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কিছু সময় পর বর্ষা জোবায়েদের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বর্ষা মাহীরকে না করে দেয় এবং জোবায়েদকে পছন্দ করেন বলে জানান। কিন্তু কিছুদিন পর বর্ষা মাহীরকে জানান যে জোবায়েদকে আর ভালো লাগছে না। এরপর তারা জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ওসি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা হত্যার পরিকল্পনা স্বীকার করেননি। পরে মাহীর ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে সব সত্যতা সামনে আসে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তারা কীভাবে জোবায়েদকে সরানো যায় তা ঠিক করে। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।

জোবায়েদ হোসাইন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। এছাড়াও তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।

গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের রওশান ভিলা বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

রোববার বিকেল আনুমানিক ৪টা ৪৫ মিনিটে জোবায়েদ ওই ছাত্রীর বাসার তৃতীয় তলায় উঠার সময় সিঁড়িতেই খুন হন। নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত ছড়িয়ে ছিল, আর তৃতীয় তলায় তার মরদেহ উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

খুনের পর শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ করে আগুন জ্বালান এবং তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন। ওইদিন রাত ১১টায় পুলিশ বর্ষাকে হেফাজতে নেয়।

দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের বাসা থেকে তাকে থানায় প্রটোকলের মাধ্যমে আনা হয়। পরদিন জোবায়েদ হোসাইনের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন