

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের অপবাদ দিয়ে তৃপ্তি রায় (২৩) নামে এক গৃহবধুকে বিচার শালীসে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে গাছের ডালে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধু তৃপ্তি রায়।
রবিবার সকালে উপজেলার ১১নং বৈরচুনা ইউনিয়নের দক্ষিণ দোপাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, দক্ষিণ দোপাইল গ্রামের উপেন মাস্টারের ছেলে পবিত্র চন্দ্র রায়ে সাথে একই এলাকার যতিশ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী তৃপ্তি রায়ের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে এমন গুঞ্জন ছিল। এর জের ধরে গত শনিবার সকালে তৃপ্তি রায়কে বাড়িতে ধরে আনেন পবিত্র রায়ের স্ত্রী কিরণ মালা। এক পর্যায়ে তর্ক বিতর্কের পর ওই গৃহবধুকে মারপিট করে কিরণ মালা ও তার ছেলে চিরঞ্জিৎ রায়। পরে বৈরচুনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টেলিনা সরকার হিমুকে ডেকে নিয়ে পবিত্র রায়ের বাড়িতে শালিস বৈঠক বসানো হয়। শালিস বৈঠকে একই অপবাদ দিয়ে চেয়ারম্যান টেলিনা সরকার হিমু ও ৪নং ওয়ার্ডের ইউ’পি সদস্য মুসলিম উদ্দীন তৃপ্তি রায়কে কয়েকটি চড় থাপ্পর মারেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অপমান অপদস্ত করেন। শালিস শেষে তৃপ্তি রায়কে তার স্বামীর বাড়িতে রেখে আসা হলে স্বামী যতিশ চন্দ্র রায় তাকে নিতে অস্বীকার করে।
পরে রবিবার সকালে ওই এলাকার নওডাঙ্গা নয়াপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুকুর পাড়ে জাম্বুড়া গাছে ঝুলন্ত মরদেহ দেখনে পান স্থানীয়রা।
নিহতের স্বামী যতিশ চন্দ্র রায় বলেন, আমার স্ত্রীকে পরকীয়া প্রেমের অপবাদ দিয়ে দিনভর নির্যাতন করে আমার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি সুরহা না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার স্ত্রীকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করি। সে হয়তো অপমান অপদপ্ত সইতে না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তৃপ্তি রায়ের পিতা শিরেন চন্দ্র রায় বলেন, আমার মেয়েকে পরকীয়া প্রেমের অপবাদ দিয়ে শালিস বৈঠকের নামে দিনভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে আমার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে আমার জামাই আমাকে সংবাদ দেয়। এ ঘটনায় থানায় এজাহার দিয়েছি।
ঘটনার বিষয়ে ইউ’পি সদস্য মুসলিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা করে হলে তার ব্যবহৃত মোবইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বৈরচুনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টেলিনা সরকার হিমু বলেন, এ বিষয়ে আমি আপনাদের (সাংবাদিকদের) কিছু বলবো না। থানায় এজাহার দিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। তদন্তেই সব উঠে আসবে।
পীরগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, রবিবার সকালে বৈরচুনা এলাকা থেকে ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাম ঠাকুরগাঁও মর্মে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে থানায় এজাহার দিয়েছেন। এটি হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
