সোমবার
০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সোমবার
০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণে মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে'

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
ছবি: এনপিবি নিউজ
expand
ছবি: এনপিবি নিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে গৃহীত “পদ্মা নদীর উভয় তীরে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (১ম পর্যায়)” এর অগ্রগতি দেখতে গতকাল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব শাব্বীর আহমদ।

তিনি বলেন, “পদ্মা নদীর ভাঙন কেবল ভৌগোলিক পরিবর্তন নয়, এটি মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান সরকার এ সমস্যাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুঃখ-কষ্ট অনেকটা কমে যাবে।”

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদী শিবগঞ্জ উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদীর বাম তীরে প্রায় ১১.১৫ কিলোমিটার এবং ডান তীরে প্রায় ১৪.২০ কিলোমিটার, মোট ২৫.৩৫ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ফারাক্কা ব্যারেজের প্রভাবে প্রতিবছর শত শত পরিবার বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আমবাগানসহ নানা স্থাপনা হারাচ্ছে। গত দশ বছরে পদ্মার ব্যাংকলাইন প্রায় ৩ কিলোমিটার সরে গেছে, যা জেলার অর্থনীতি ও পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) প্রকল্পটির ফেজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর, মনাকষা ও পাঁকা এলাকায় পদ্মার বাম তীরে ৫.৭৪ কিলোমিটার স্থায়ী নদীতীর সংরক্ষণ কাজ

সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মার ডান তীরে ৩.০৯ কিলোমিটার সতর্কতামূলক নদীতীর সংরক্ষণ কাজ

সদর উপজেলার আলাতুলি এলাকায় ০.৫০ কিলোমিটার পুনর্বাসনমূলক নদীতীর সংরক্ষণ কাজ

নভেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৯ মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫১.০২৯১ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী পদ্মার উভয় তীরে ভাঙন প্রতিরোধের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ রক্ষা, কৃষিজমি সংরক্ষণ, দারিদ্র্য বিমোচন এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. আহসান হাবীব, শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, স্থানীয় ইউপি সদস্যবৃন্দ এবং নদীতীরবর্তী এলাকার অসংখ্য বাসিন্দা।

সহকারী একান্ত সচিব শাব্বীর আহমদ পাঁকা ইউনিয়নের লক্ষীপুর, জাইটপাড়া, কানছিড়া এবং দুর্লভপুর ইউনিয়নের ঝাইলপাড়া, আইয়ুব বিশ্বাসের ঘাট ও ফিল্ডের বাজার এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মাপাড়ের মানুষ বহু বছর ধরে নদীভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে শুধু নদীতীর সংরক্ষণই নয়, মানুষের ঘরবাড়ি, জীবিকা ও কৃষি উৎপাদনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। সরকারের উন্নয়ন ধারায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন