

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) আফসার উদ্দীনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতি, সরকারি টাকা আত্মসাৎ, স্বাক্ষর জালিয়াতি, সেবা নিতে আসা মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় ও হয়রানিসহ নানা অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগের জেরে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, স্থানীয় রাজনৈতিক–সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ অবিলম্বে সচিবের অপসারণ দাবি করেছেন।
সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হজ্জে গেলে সুযোগ বুঝে সচিব আফসার উদ্দীন চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে টিআর–কাবিখার ২৩ লাখ টাকার প্রথম কিস্তি তুলতে পিআইও অফিসে যান। কিন্তু চেয়ারম্যান উপস্থিত না থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) চেক বাতিল করেন। তখনই বিষয়টি পরিষদের সদস্যদের নজরে আসে।
বুধবার–বৃহস্পতিবার সরেজমিন গেলে ইউপি সদস্যরা জানান, প্রথম এক বছর ভালো থাকলেও পরে সচিব বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ভিজিডি, বয়স্ক–বিধবা ভাতা, জেলে চাল, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন—সব সেবার বিনিময়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দরিদ্র মানুষের অনলাইন ভিজিডি রেজিস্ট্রেশনেও টাকা আদায় করতেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সদস্যরা।
তারা আরও জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর সচিবের আচরণ আরও বেপরোয়া হয়। চেয়ারম্যান হজ্জে থাকার সময়ে তিনি স্বাক্ষর জাল করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা ছাড়াও বরাদ্দকৃত প্রকল্পের কিছু টাকা আগেই আত্মসাৎ করেছেন। সদস্য বশির হাওলাদারের বরাদ্দকৃত ডিপ–টিউবওয়েলের ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পরবর্তী সময়ে চাপের মুখে তা ফেরত দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
এর আগে দক্ষিণ চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদেও দুর্নীতি, অনিয়ম ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে সাত মাসের মধ্যেই তাকে বদলি করা হয়েছিল।
স্থানীয়দের প্রশ্ন—সামান্য চাকরির বেতনে সচিব কীভাবে নিজ এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন?
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা জানান, সচিবের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় পরিষদের স্বচ্ছতা–জবাবদিহি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। বারবার সাবেক ইউএনও ইমরান খান ও পিআইও অফিসে অভিযোগ করেও কার্যকর ব্যবস্থা হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা তিন দফা দাবি তুলেছেন—
১. অভিযোগের নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত
২. পরিষদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা
৩. দুর্নীতিতে জড়িত সচিবকে অবিলম্বে অপসারণ
অভিযুক্ত সচিব আফসার উদ্দীন বলেন—কয়েকজন মেম্বার অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) মো. জসিম উদ্দীন বলেন,বিষয়টি আমরা জানি। নবাগত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন