

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) ব্যবহার করে নিরাপদ ও লাভজনক কৃষি উৎপাদনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার চামটারপাড় এলাকার কৃষক শামছুল হক ও তাঁর দুই ছেলে মামুন মিয়া এবং ওমর ফারুক। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা দুই একর জমি লিজ নিয়ে মিশ্র কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। এ জমিতে তারা চাষ করছেন কলা, পেঁপে, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, শীতকালীন পেঁয়াজসহ বিভিন্ন শাকসবজি। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে তারা নিজেদের খামারে প্রস্তুত করা জৈব সারের (ভার্মি কম্পোস্ট) ব্যবহার করছেন। ফলে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি মিলছে ভালো ফলন ও উচ্চ মুনাফা। ইতোমধ্যে দারিদ্রতা জয় করে তারা হয়ে উঠেছেন স্বাবলম্বী। কৃষক শামছুল হক জানান, তাদের পেঁপে বাগান থেকে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পেঁপে প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং পাকা পেঁপে প্রতি মণ ১,৬০০ থেকে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি ছড়ি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তাদের বাগান থেকেই বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা সরাসরি ফল কিনে নিয়ে যান। শামছুলের ছেলে মামুন মিয়া বলেন, “ধানের চেয়ে কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় আমরা কলা, পেঁপে এবং বিভিন্ন সবজি চাষ করছি। রাসায়নিক সার না দিয়ে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) ব্যবহার করায় ফলনও ভালো হচ্ছে, লাভও বাড়ছে।” পাইকার নুরনবী মিয়া ও উকিল আমিন জানান, তারা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই বাগান থেকে ৬-৭ মণ করে পেঁপে সংগ্রহ করেন। রাসায়নিক সার ছাড়া প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত হওয়ায় এসব পেঁপের গুণ ও চাহিদা দুটোই বেশি। বিভিন্ন এলাকার আরও অনেক পাইকার এখান থেকে পেঁপে কিনে নিয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দা নূর জামাল মিয়া ও আবুল হাসন বলেন, শামছুল হকের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ফলজ ও সবজি বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাঁদের দেখে এলাকার আরও অনেক যুবক কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছেন। সরকারি প্রণোদনা ও পরামর্শ পেলে এই অঞ্চলে কৃষিখাত আরও সমৃদ্ধ হবে বলে তারা মনে করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হাসান বলেন, “নিরাপদ ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে শামছুল হককে আমরা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়েছি। যে কোনো কৃষক বা উদ্যোক্তা চাইলে আমরা একইভাবে সহযোগিতা করবো।”
মন্তব্য করুন