শুক্রবার
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে অসহায় প্রতিবন্ধী পরিবারের পাশে তারেক রহমান

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৫ পিএম
সহায়তা তুলে দেন পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন
expand
সহায়তা তুলে দেন পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চার প্রতিবন্ধী সদস্যকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা স্বামীহারা জাহানারা বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর নির্দেশে খাদ্যসামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এই অসহায় পরিবারের কাছে।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা বাজারসংলগ্ন জাহানারার বাড়িতে গিয়ে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহায়তা তুলে দেন পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর অনলাইনে ‘চার প্রতিবন্ধীকে নিয়ে স্বামীহারা জাহানারার জীবনসংগ্রাম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নজরে আসে।

অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, “সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনাটি আমাদের নজরে আসে। তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা দ্রুত এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিছু আর্থিক সহায়তা ও খাদ্যসামগ্রী দিয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় যাক বা না যাক—এই পরিবারের পাশে থাকবে। পরবর্তী সময়ে তাদের চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন, আমরা তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।”

অসহায় জাহানারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা খুবই অসহায়। সংবাদ প্রকাশের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা খাবার ও টাকা নিয়ে এসেছে। এজন্য তারেক জিয়াসহ সবাইকে দোয়া জানাই। জালাল ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা। দীর্ঘদিন পর মনে হলো কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে।”

উল্লেখ্য, কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা বাজারসংলগ্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পেছনে ছোট একটি ঘরে ৫৫ বছর বয়সী জাহানারা বেগমের নীরব যুদ্ধ চলছেই। তাঁর পরিবারে চারজন প্রতিবন্ধী—যাদের প্রত্যেকের গল্প আলাদা, কিন্তু কষ্ট একই।

প্রথম কন্যা চাঁদনী (২৬) ও দ্বিতীয় কন্যা আঁখি (২২) দু’জনেই মানসিক প্রতিবন্ধী। হঠাৎ কান্না, হাসি বা আচমকা রাগে ঘরভাঙচুর—সবই সামলাতে হয় একা জাহানারাকেই।

বোন মিনা আক্তার (৪৩) শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাঁটতে পারেন না। হাঁটুর ভেতরে বাড়তে থাকা টিউমারের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে দিন কাটে। চিকিৎসার টাকাও নেই।

ভাগ্নে মনির হোসেন (৩৯) জন্ম থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এখন সম্পূর্ণ অন্ধ। কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করলে আলো ফিরে পাওয়ার আশা আছে, কিন্তু সেই চিকিৎসা খরচ তাদের নাগালের বাইরে।

এই চারজনের যত্ন নিতে নিতে জাহানারা বেগম নিজেই আজ অসুস্থ। ফুসফুস ও হৃদরোগ তাঁকে প্রায় অচল করে দিয়েছে। অনেক সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, কিন্তু ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই—মেয়েদের খাওয়া, বোনের ওষুধ, ভাগ্নের যত্ন সবই তাঁকেই সামলাতে হয়। কখনো প্রতিবেশীরা একটু ভাত দেন, কখনো পুরোনো কাপড়। মাসে একবার কেউ যদি কিছু সহায়তা করে, তাতেই তিনি কৃতজ্ঞ। কিন্তু সব দিন সমান যায় না। অনেক দিন পুরো পরিবার না খেয়েই রাত কাটায়। তখন জাহানারা বেগম শুধু দোয়া করেন—“আল্লাহ, আমারে না হয় ক্ষুধায় রাখো, কিন্তু এইগুলারে যেন ক্ষুধায় না রাখো।” এই পরিবারের প্রয়োজন শুধু সাহায্য নয়—মানবতা ও সহানুভূতি।

মিনা আক্তারের জন্য একটি হুইলচেয়ার, অপারেশনের ব্যবস্থা, মনির হোসেনের কর্নিয়া প্রতিস্থাপন, দুই কন্যার মানসিক চিকিৎসা—এসবই তাঁদের জীবনের বড় স্বপ্ন।

উপহার বিতরণে অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন উপজেলা বিএনপির মানবাধিকার সম্পাদক জাকির হোসেন অনিক, আচমিতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম রুবেলসহ স্থানীয় নেতারা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন