

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ব্ল্যাকমেইল, মামলা দিয়ে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় এবং সংঘবদ্ধ প্রতারণার অভিযোগে আলোচিত তরুণী তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) গভীর রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, সম্প্রতি গুলশানের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জুলাই আন্দোলন সংশ্লিষ্ট মামলার ভয় দেখিয়ে বিপুল অর্থ আদায়ের অভিযোগ সামনে আসে। তদন্তে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে একই কৌশলে অর্থ হাতিয়ে আসছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই চক্রের নেতৃত্বে ছিলেন তাহরিমা জান্নাত সুরভী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও জানায়, কালিয়াকৈর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। ওই মামলায় অপহরণ, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বাদী নাইমুর রহমান দুর্জয় নামের এক জন সংবাদকর্মী।
পুলিশের অভিযোগ অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি নিয়মিত উসকানিমূলক ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতেন। এমনকি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই চক্রটি অতীতেও নানা ব্যক্তিকে হত্যা মামলা কিংবা রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আনুমানিক কয়েক কোটি টাকা আদায় করেছে। বিশেষ করে গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ঘিরে গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় সংঘটিত সহিংস ঘটনার মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা নেওয়া হতো। প্রথমে গ্রেপ্তার ও হয়রানির আতঙ্ক তৈরি করে পরে ‘সমঝোতা’র প্রস্তাব দিয়ে অর্থ দাবি করাই ছিল তাদের কৌশল।
উল্লেখ্য, তাহরিমা জান্নাত সুরভী নিজেকে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ও সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ ভিডিও, বিতর্কিত বক্তব্য এবং পরিকল্পিত প্রচারণার মাধ্যমে তিনি পরিচিতি লাভ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, এই পরিচিতি ও জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তিনি প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতেন এবং পরবর্তীতে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ে জড়িত হতেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে দ্রুত আদালতে হাজির করা হবে।
মন্তব্য করুন
