

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ভারতের মধ্যপ্রদেশের ছত্তিশগড়ে ঘটেছে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা, যা পুলিশি তদন্ত ও বিচারব্যবস্থাকে বড় প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। যাকে খুন করা হয়েছে বলে মামলা করা হয়েছিল, গ্রেপ্তার হয়েছিল একাধিক অভিযুক্ত, নেওয়া হয়েছিল স্বীকারোক্তি—সবকিছু সম্পন্ন হওয়ার পর হঠাৎ করেই সেই ‘মৃত’ ব্যক্তি নিজেই থানায় উপস্থিত হয়েছেন। এতে আলোচিত ওই হত্যামামলাটি পুরোপুরি উল্টে গেছে এবং নতুন করে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
ঘটনার শুরু গত ২২ অক্টোবর, যখন পূর্ণানগর–তুরিতোংরি বনাঞ্চল থেকে একটি অর্ধদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেটিকে সিয়াম খাখা (৩০) হিসেবে শনাক্ত করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে রামজিত রাম, বীরেন্দ্র রাম ও এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পলাতক শীতল মিনজ ও জিতু রামকেও আসামি করা হয়। নিহতের বাবা–মা ও ভাই মরদেহ শনাক্ত করেন, আর পুলিশ জানায় অভিযুক্তরা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলের পুনর্গঠনও করে—সব মিলিয়ে মামলাটি প্রায় নিশ্চিত হিসেবেই ধরা হয়েছিল।
কিন্তু গত শনিবার গভীর রাতে সিয়াম নিজেই সিটি কোতোয়ালি থানায় গিয়ে উপস্থিত হন। তিনি জানান, কাজের খোঁজে তিনি ঝাড়খণ্ডে ছিলেন এবং ফোন না থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। জশপুরে ফিরে তিনি জানতে পারেন, তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার বন্ধুদের ‘হত্যা’ মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সিয়ামের অভিযোগ, “আমি জীবিত থাকতেই আমাকে মৃত ঘোষণা করা হলো কেন? আগে ডিএনএ পরীক্ষা করা উচিত ছিল।” তিনি তার নির্দোষ বন্ধুদের মুক্তির দাবি জানান এবং বলেন, এই ঘটনায় তার পরিবার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনাটি জানাজানি হতেই সিতোঙ্গা গ্রামে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের সরপঞ্চ কল্পনা টোপ্পো জানান, একটি অর্ধদগ্ধ মরদেহকে সিয়াম হিসেবে শনাক্ত করে অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছিল, কিন্তু তারা আসলে নির্দোষ। তিনি সিয়ামকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল এবং স্বীকারোক্তি ও শনাক্তকরণ মতামত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নেওয়া হয়েছিল। যদিও পুলিশ সরাসরি সেখানে উপস্থিত ছিল না, তথাপি আদালতে সব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। এখন সিয়াম জীবিত থাকায় মামলা অনিশ্চিত অবস্থায় পড়ে গেছে এবং অভিযুক্তদের অস্থায়ী মুক্তির প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। তদন্তের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে একজন গেজেটেড কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা হয়েছে, যাতে প্রকৃত নিহতের পরিচয় নির্ধারণ করা এবং এই ভুল শনাক্তকরণ ও স্বীকারোক্তি নেওয়ার কারণ খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্র: এনডিটিভি
মন্তব্য করুন

