

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বরগুনার আমতলী উপজেলার কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় ক্লার্ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে— মাদ্রাসা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নিজাম উদ্দিন আকন এবং মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সভাপতি মো. জিয়াদুল করিমের যোগসাজশে অনিয়মের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।
পরীক্ষা আয়োজনের আগে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁনকে অবহিত না করেই লাল নিশান টানিয়ে পুলিশ মোতায়েন করে পরীক্ষা পরিচালনার অভিযোগও উঠেছে। এতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে আজ শনিবার সকালে কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে।
জানা গেছে, ক্লার্ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ৯ সেপ্টেম্বর। ওই পদে ১১ জন আবেদন করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকনের ছেলে রেদওয়ানুল ইসলাম আবির আকন এবং দাতা সদস্য মো. আব্বাস মৃধার ছেলের স্ত্রী আল্পনা আক্তার।
শনিবার অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় ৯ জন অংশ নেন। ৩৫ নম্বরের ওই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই নিয়োগ বোর্ড তিনজন প্রার্থীর— অধ্যক্ষের ছেলে আবির আকন, দাতা সদস্যের ছেলের স্ত্রী আল্পনা আক্তার ও আরিফ নামের আরেক প্রার্থীর-ভাইভা পরীক্ষা নেয়।
অন্য পরীক্ষার্থীদের দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে বলা হয়, পরীক্ষা শেষ হয়েছে, আপনারা যেতে পারেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় পরীক্ষার্থীরা।
পরীক্ষার্থী নাঈম ও সাবিনা আক্তার বলেন, এটি ছিল সম্পূর্ণ সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা। আগেই টাকা লেনদেন করে নির্ধারিত প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তারা আরও জানান, লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই ভাইভা নেওয়া হয় এবং তাদের কোনো ফলাফল জানানো হয়নি।
দাতা সদস্য মো. আব্বাস মৃধা স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষা চলাকালে আমি মাদ্রাসা অফিস কক্ষে বসেছিলাম। আমার ছেলের বউ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অধ্যক্ষ আমাকে বসতে নিষেধ করেননি।
অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকন বলেন, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। এরপর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করলেও তা রিসিভ করেননি।
সভাপতি মো. জিয়াদুল করিম বলেন, অভিযোগ থাকতেই পারে, তবে পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। বারবার ফোন ও মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি আর সাড়া দেননি।
মাদ্রাসা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব। পরবর্তীতে ফোন ও মেসেজ পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, অধ্যক্ষের অনুরোধে পুলিশ দেওয়া হয়েছিল, তবে লাল নিশান টানানোর বিষয়টি আমার জানা নেই।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, এই নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। ১৪৪ ধারা জারি ছাড়া লাল নিশান টানানো যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন