

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা প্রায় ২০ বিঘা জমির সবজি ক্ষেত কেটে নষ্ট করে দিয়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক, ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা।
কৃষকেরা বলছেন এটি ছিটেফোঁটা ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত, ধারাবাহিক এবং সংগঠিত নাশকতা।
জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর থেকে টানা প্রতিটি রাতে দুর্বৃত্তরা স্থানীয় কৃষকের জমিতে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত নষ্ট করে আসছে। প্রথমদিকে অল্প ক্ষতি হলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে হামলার পরিধি বাড়তে থাকে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে কাশিমনগর ও চরছায়েট এলাকায়।
ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে ছিল লাউ, কুমড়া, বরবটি, শিম, মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি।
কৃষকেরা জানান- ঋণ ও ধার করে এই চাষাবাদ করেছিলেন তারা। বাজারে এসব সবজির দাম ভালো থাকায় লাভের আশা ছিল তাদের। কিন্তু এই হামলায় সব আশাই ভেঙে গেছে এক রাতেই।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা হলেন ফারুক মিয়া, মানিক মিয়া, শহিদুল্লাহ, আঙ্গুর মিয়া, সুরুজ মিয়া, ইমাম উদ্দিন, ওসমান মিয়া, নুরুল ইসলাম, আলতাব হোসেন, শাফির উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, জহিরুল ইসলাম, আব্দুল কাদের ভূইয়া, সোহরাব হোসেন, মহিউদ্দিন, সামসুল হক (মৃত), তোতা মিয়া, ইসমাইল হোসেন, রইছ উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন, বাদল সিরাজ উদ্দিন, মধু মিয়া, কাঞ্চন মিয়া, আব্দুর রহিম, জুয়েল মিয়া, আমির হোসেন, নুর মিয়া, রাশিদা বেগম, আফসার উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, মোতি মিয়া, ফরমান হোসেন, আব্দুল হাই, শাজাহান, কালা গাজী, কামাল মিয়া, কামাল হোসেন, আসাদ মিয়া, রাশিদ মিয়া, কালা মিয়া, গোলাপ মিয়া, আতর চাঁন, লিয়াকত আলী এবং মাঈন উদ্দিন। তারা সবাই নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের কাশিমনগর ও চরছায়েট এলাকার কৃষক।
কৃষক ফারুক মিয়া বলেন, আমরা নিজের ঘরের ভাইদের ওপরও এমন অত্যাচার করতাম না। এত কষ্ট করে চাষ করেছি, আর রাতে এসে সব ধ্বংস করে দিলো। এখন বাচ্চাদের পড়াশোনা আর ঋণ শোধের চিন্তা মাথায় ঘুরছে।
কৃষক শাফির উদ্দিন বলেন, এটা শুধু ফসল নয় এটা আমাদের খাবার, আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন। এখন রাতে পাহারা না দিলে কৃষিকাজ অসম্ভব।
বেলাব উপজেলা কৃষি অফিসার মুহিবুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ পর্যন্ত এই এলাকার কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা টাকার অঙ্কে হিসাব করলে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো হবে। আমরা স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলেছি এবং তাদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি তাদেরকে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।”
এ বিষয়ে বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, আমরা বিষয়টি সরজমিনে গিয়ে দেখেছি। এ এলাকার কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি কৃষকদের তাদের নিজস্ব জমি পাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন