

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


এক অভাগা মায়ের চোখ বেয়ে নিঃশব্দেই গড়িয়ে পড়ে পানি। বাইরে থেকে জলবিন্দু মনে হলেও সেই অশ্রুর ভেতরে জমে আছে ছয় মাসের কষ্ট, ভাঙা স্বপ্ন, বুকচিরে ওঠা কান্না আর অবিরাম দুশ্চিন্তা।
লক্ষ্মীপুরের হুসনেয়ারা আক্তার পারভীন যেন দুই নয়নকে বদলে ফেলেছেন এক অনন্ত শোকের নদীতে - যার শেষ নেই, বিরাম নেই, শান্তিও নেই।
দিন গুনতে গুনতে ছয় মাস পার হয়ে গেল। তবুও আশার আলো নেই, নেই কোনও স্বস্তির খবর। চোখের পানি পর্যন্ত শুকিয়ে আসছে, কিন্তু তিনি এখনও জানেন না তাঁর নাড়িছেঁড়া ধন আরাফাত সুলতানা দিনা বেঁচে আছে নাকি অন্ধকার কোনো গহ্বরে তলিয়ে গেছে।
হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া মেয়ের রেখে যাওয়া সামান্য গন্ধ ছাড়া আর কিছুই নেই তাঁর কাছে। নেই কোনো খোঁজ, নেই কোনো সান্ত্বনা। পরিবারের হাতে এসেছে শুধু মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস আর দীর্ঘ নীরবতার বোঝা।
১৮০ দিন পেরিয়ে গেল। দিনের আলো থেকে রাতের অন্ধকার কোথাও মিলল না আরাফাত সুলতানা দিনার শেষ অবস্থানের সূত্র। রাষ্ট্রের কাঠামো, প্রশাসনের পথঘাট, এমনকি গণমাধ্যমের নজরও ব্যর্থ হয়েছে এক যুবতীর অস্তিত্ব খুঁজে পেতে। দিনে-দুপুরে একজন মানুষ হারিয়ে গেল, অথচ ছয় মাসেও তার হদিস নেই -এ দায় কি সত্যিই রাষ্ট্র এড়াতে পারে?
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের দস্তগীর আলম চৌধুরীর মেয়ে আরাফাত সুলতানা দিনা থাকতেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মমতাজ ভিলায়, নানার বাড়িতে। ঘটনার দিনে তিনি শুধু একটি বোরখা পরে বের হয়েছিলেন বাবার বাড়ি থেকে জমির খতিয়ান আনার জন্য। নিজের ব্যবহৃত এটিএম কার্ড, টাকা সব রেখে গিয়েছিলেন ঘরে। সেদিনের পর আর কখনো ঘরে ফেরা হয়নি তার।
দিনার ভাই আহাদুল ইসলাম আকাশ, সময় টেলিভিশনের কর্মী, অসহায় মন নিয়ে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। পরিবার সংবাদ সম্মেলনে কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছে তাদের দুর্দশা, অসহায়তা আর অনুনয়।
কিন্তু দিনা এখনও নিখোঁজ। মায়ের ডাকে সাড়া নেই। অশ্রু শুকিয়ে আসছে, কিন্তু মায়ের অপেক্ষা শুকায় না কখনোই না।
দিনার মায়ের কড়জোড় অনুরোধ প্রশাসন যেন আরও আন্তরিকভাবে মেয়ের সন্ধান খোঁজে। তার অনুরোধ একটাই: “আমার মেয়েটাকে ফিরিয়ে দিন।
মন্তব্য করুন