শনিবার
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেকনাফে ডাকাত-অপহরণ আতঙ্ক: মসজিদে রাত কাটে নারীদের, পাহারায় স্থানীয়রা

শহিদুল ইসলাম. উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় যুবকরা। ছবি: এনপিবি
expand
রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় যুবকরা। ছবি: এনপিবি

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি ডাকাত ও অপহরণকারীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় বাহারছড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে চরম আতঙ্ক।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাত নামলেই নারী, শিশু ও বয়স্করা নিজের ঘর-বাড়ি ছেড়ে মসজিদ ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তরুণরা নির্ঘুম রাত কাটিয়ে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের নিরাপত্তায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী, চৌকিদারপাড়া ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অধিকাংশ বাড়ি পাহাড়সংলগ্ন হওয়ায় সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাহাড়ি ডাকাতরা যেকোনো সময় লোকজনকে অপহরণ করছে।

মূল্যবান কোনো জিনিস না পেলে পরিবারের কাউকে পাহাড়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গুলিবর্ষণ, বাড়ি-ঘরে হামলার চেষ্টা ও অপহরণের ঘটনা আরও বেড়ে গেছে।

চৌকিদারপাড়ার বাসিন্দা নুরে আলম বলেন, শতাধিক পরিবার এখন প্রতিদিন আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই আমরা মসজিদের উঠানে আশ্রয় নেই। শিশু-বৃদ্ধরা খোলা জায়গায় রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।

শীলখালীর বাসিন্দা লিয়াকত আলী জানান, দুই রাত আগে ২০-৩০ জনের ডাকাত দল গ্রামে ঢোকে। আমাদের প্রতিরোধে তারা পালিয়ে যায়। এভাবে প্রতিরাত আতঙ্ক নিয়ে থাকতে হচ্ছে।”

শীলখালীর জুবায়ের ইসলাম জুয়েল বলেন, দুই দিন ধরে আমরা যুবকরা পাহারায় আছি। ডাকাতদের প্রতিরোধে সর্বদা প্রস্তুত।

শিশু ইমরান খান নয়ন, যাকে শুক্রবার মাগরিবের পর ডাকাতরা অপহরণ করে নিয়ে যায়, জানায়-১০-১৫ জন ডাকাত তাকে পাহাড়ে আটকে রাখে। গ্রামবাসীর চাপের মুখে পাঁচ ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়।

শামলাপুরের বাসিন্দা শহীদ উল্লাহ জানান, ডাকাত আতঙ্কের কারণে ঘরে থাকা যায় না। প্রতিদিন মসজিদের বারান্দায় রাত কাটাতে হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ চাই।

উখিয়া-টেকনাফ আসনের এমপি প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, বাহারছড়ার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

টেকনাফ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস জানান, শীলখালীর ঘটনায় আমরা দ্রুত অভিযান পরিচালনা করলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ডাকাত ও অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে আমরা সতর্ক রয়েছি

। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে পাহাড়ি ডাকাতদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে এলাকায় নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনা হোক।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন