

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সমেশপুর গ্রামের শতাধিক কৃষক বহু বছর ধরে সবজির চারা উৎপাদন করছেন। এই গ্রাম এখন সারাদেশে পরিচিত ‘চারা গ্রাম’ হিসেবে।
এবার এই গ্রামেই নতুন প্রযুক্তির ছোঁয়া এনেছেন তরুণ উদ্যোক্তা হোসাইন রাব্বি। মাটির বদলে নারিকেলের ছোবড়ার গুড়ো বা কোকোপিট ব্যবহার করে চারা উৎপাদন করে তিনি বদলে দিয়েছেন স্থানীয় কৃষির চিত্র। রাব্বি স্নাতক শেষ করে একসময় প্রবাসে গিয়েছিলেন কর্মের সন্ধানে। দেশে ফিরে নতুন কিছু করার ভাবনা থেকে অনলাইনে দেখেন কোকোপিটে চারা উৎপাদনের পদ্ধতি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে শুরু করেন পরীক্ষামূলকভাবে চারা উৎপাদন। এখন সেই উদ্যোগই তাকে পরিচিত করেছে সফল তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে।
খোঁব নিয়ে জানা যায়, পলিথিনে ঢাকা তাবুর ভেতরে মাচার ওপরে ট্রেতে সাজানো কোকোপিট ভর্তি গর্তে সবজির চারা। কেউ পানি দিচ্ছেন, কেউ আবার বিক্রির জন্য চারা তুলছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা আগ্রহভরে এই নতুন প্রযুক্তি দেখছেন। ঢাকা থেকে আসা এক ক্রেতা খায়রুল বাশার টিপু জানান, তিনি ছাদবাগানের জন্য টমেটোর চারা কিনতে এসেছেন। এই চারায় রোগবালাই কম হয়, তাই আগ্রহী হয়েছি, বলেন তিনি।
রাব্বি এখন টমেটো, মরিচ, ক্যাপসিক্যামসহ বিভিন্ন সবজির প্রায় ৭০ হাজার চারা তৈরি করেন, যা এক মাসেই বিক্রি হয়ে যায়। তিনি বলেন, মাটিতে চারা তৈরি করলে অনেক সময় নষ্ট হয় এবং চারা মারা যায়। কোকোপিটে চারা তৈরি করলে ঝুঁকি অনেক কমে। কৃষকের লোকসানও কমে। তিনি আরও জানান, পলিনেট হাউজ স্থাপন করা গেলে বড় আকারে উৎপাদন সম্ভব হবে।
একই গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ৪৫ বছর ধরে মাটিতে চারা লাগিয়েছি। অনেক চারা মারা যেত, জলাবদ্ধতাও সমস্যা ছিল। এখন ট্রেতে কোকোপিটে চারা তৈরি করলে সেসব সমস্যা থাকে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার বলেন, সমেশপুরে জলাবদ্ধতা বাড়ায় মাটিতে চারা উৎপাদন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই কৃষকরা কোকোপিট প্রযুক্তিতে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে মাটিবাহিত রোগ হয় না, চারা নষ্ট হয় না। তিনি জানান, কৃষি অফিস থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
কোকোপিটে চারা উৎপাদনের এই নতুন প্রযুক্তি এখন শুধু সমেশপুর নয়, পুরো বুড়িচং জুড়েই ছড়িয়ে পড়ছে। তরুণ উদ্যোক্তা রাব্বির হাত ধরেই বদলে যাচ্ছে গ্রামের কৃষি ও কৃষকের ভাগ্য।
মন্তব্য করুন