বুধবার
১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রেনের নিচে বিস্ফোরণ, অল্পের জন্য রক্ষা শতাধিক যাত্রী

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ভারতীয় আতশবাজির বস্তা ট্রেনের নিচে পড়ে বিস্ফোরণ
expand
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ভারতীয় আতশবাজির বস্তা ট্রেনের নিচে পড়ে বিস্ফোরণ

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় একটি ট্রেনের নিচে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যা চোরাকারবারিদের ফেলে দেওয়া ভারতীয় আতশবাজির বস্তা থেকে ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান শতাধিক যাত্রী।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বুড়িচং উপজেলার পীতাম্বর এলাকার রেয়াছত আলী ফকির মাজারের পাশে এ ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সালদানদী ও শশীদাল রেলস্টেশন হয়ে চট্টগ্রামমুখী ও ঢাকা অভিমুখী ট্রেনে ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য পাচার করে একটি চক্র। ওইদিন সন্ধ্যায় সদর রসুলপুর স্টেশনে প্রশাসনের অভিযান চলছে জানতে পেরে চোরাকারবারিরা তড়িঘড়ি করে ট্রেন থেকে কিছু বস্তা বাইরে ফেলে দেয়। এর মধ্যে একটি আতশবাজিভর্তি বস্তা পাশ দিয়ে যাওয়া মহানগর গোধূলী এক্সপ্রেসের নিচে চলে গেলে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণে ট্রেনে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগে এবং আতঙ্কে যাত্রীরা চিৎকার শুরু করেন। তবে ট্রেন চলন্ত থাকায় আগুন ছড়ায়নি, ফলে বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পর কিছু মানুষ রেললাইনে পড়ে থাকা বস্তা ও অন্যান্য মালামাল সংগ্রহ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই স্থানীয় একটি গোষ্ঠী দ্রুত সেগুলো সরিয়ে ফেলে।

একজন স্কুলশিক্ষার্থী বলেন, “অভিযানের খবর পেয়েই তারা মালামাল ফেলে দেয়। আতশবাজি ট্রেনের চাকার নিচে পড়ে বিস্ফোরণ হয়, তখন সবাই আতঙ্কে ছিল।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে ট্রেন আসার আগে এসব অবৈধ পণ্য স্টেশনের ভেতরে এনে রাখা হয়, পরে সুবিধাজনক সময়ে ট্রেনে তোলা হয়।

একজন নিয়মিত যাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এসব বস্তার ভেতরে আতশবাজির পাশাপাশি ইয়াবা, গাঁজা, ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) বিভিন্ন মাদকও থাকে। তার দাবি, পাচারচক্রের সঙ্গে রেলওয়ের কিছু কর্মী ও স্টেশন কর্মকর্তাও জড়িত থাকতে পারেন।

স্থানীয়দের মতে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একাধিক চোরাকারবারি সিন্ডিকেট সক্রিয়। তাদের মধ্যে শশীদলের রেজাউল করিম নামের এক ব্যক্তি প্রায় তিন দশক ধরে এই রুটে ভারতীয় পণ্য ও মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ আছে, তিনি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যকে ‘ম্যানেজ’ করে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের অভিযান হলেও কিছুদিন পর আবার এসব কাজ শুরু হয়।

এ বিষয়ে সদর রসুলপুর স্টেশন মাস্টার প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় ম্যাজিস্ট্রেট সানোয়ার জাহানের নেতৃত্বে চট্টলা এক্সপ্রেসে অভিযান চলার সময় এ ঘটনা ঘটে। সৌভাগ্যক্রমে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন