


মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা মহিলা দলের সাবেক সভাপতি বিএনপি নেত্রী রাহা মাহমুদা পলির আতঙ্কে অতিষ্ঠ তার নিজ এলাকার জনগণ। তিনি এর আগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আমানউল্লাহ আমান এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তার সব পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি ইউনিয়নের পাড়তিল্লি গ্রামের কুদ্দুস ডাকাতের মেয়ে রাহা মাহমুদা পলি। এলাকার মানুষের সাথে নানা উপায়ে টাকা আত্মসাৎ, মাদক ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার বিয়েসহ এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায় এই পলি। দলের (বিএনপি) নাম ভাঙিয়ে মামলা-হামলা ও তার নিজস্ব বাহিনীর দ্বারা বিভিন্ন লোকজনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে থাকেন, যা দলের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন করছে বলে জানায় স্থানীয় ও নেতাকর্মীরা। দলীয় নীতি, আদর্শ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মানিকগঞ্জ জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক ও সাটুরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি রাহা মাহমুদা পলিকে সকল পর্যায়ের দলীয় পদ থেকে স্থগিত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। ২০২৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে।
এই নেত্রীর বিষয়ে জানতে কথা হয় তার এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে তাদের একজন পাড়তিল্লি বাজারের দোকানি মোঃ: রাসেল বলেন, রাহা মাহমুদা পলির দ্বারা আমার অনেক ক্ষতি হইছে। সাটুরিয়া উপজেলায় চাউলের একটা ডিলার নিয়োগ হয়েছে কিছুদিন আগে ওই জায়গায় আমি কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। উপজেলা পরিষদ থেকে ভাড়াটে গুন্ডা দ্বারা আমাকে ওই জায়গা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি বিএনপি পরিবারের লোক আমাকে আওয়ামী লীগ বলে বের করে দেয়া হয়েছে। পনেরো জন ছেলেপেলে দ্বারা পলি আমাকে নির্যাতন করেছে ওই জায়গায়। দোকানি আরও বলেন, চাউলের ডিলারের জন্য আমি কাগজ জমা দিয়েছি এবং পলিও জমা দিয়েছে। দুইটা প্রতিযোগিতা হলে ওর সমস্যা হয় দেখে ও যেন একা পেয়ে যায়, এজন্য পোলাপান দ্বারা আমাকে ওই জায়গা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমাকে অনেক টর্চার করা হয়েছে। উনি শান্ত স্বভাবের না ওনাকে মহিলা বললে ভুল হবে,এলাকায় জিজ্ঞেস করে দেখেন ৯৯% মানুষ ওর বিপক্ষে কথা বলবে। ওর চরিত্র ভালো না, চরিত্র হীন পলি, যেমন ধরেন: ওর ৩-৪ টা বিয়ে হয়েছে। পলি নেশার সাথেও জড়িত, বিক্রি করে নেশা সামগ্ৰী এবং সেই সাথে মাদক সেবন করে।সরকারের কাছে দাবি এই সমস্ত লোকের যেন আইননত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিল্লি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিদুর রহমান বলেন,আমাগো ব্যাপারটা বললেই যথেষ্ট হয়ে যায়, ওই বাড়ির এক মহিলা কে দিয়ে আমাগো নামে সে সন্ত্রাসী কেস দিলো একটা। তারে নাকি আমরা বাড়ি দিয়ে মারছি । তার ছেলে একজন সন্ত্রাসী লোক, সেই ছেলেরে আমরা শাসন করতে গেছি,এদিকে এরকম অবস্থা আমাদের উপরে। আমাদের নামে কেস, আমাদের মারলো তার পোলাপান দিয়া। তার বাহিনী আছে ৮-১০ জন পোলাপান তার সাথে আছে এবং তাদের দিয়া অত্যাচার করে। সে রাত ১২-১ টা পর্যন্ত বাজারে ৮/১০ জন পোলাপানের সাথে আড্ডা দেয় । পাড় তিল্লি গ্ৰামের সুজন নামের এক লোক বলেন,ওতো মহিলা মানুষ, মহিলা মানুষ অনেক কিছু করতে পারে। দেখা গেছে আমার সাথে তর্ক বিতর্ক লাগলো ওমনেই আমার নামে মামলা দিয়ে দিলো। এরকম অনেকজনে পলির অত্যাচারে ভয়ে মুখ খোলেনা। আমরা রাজনীতি করি দলের জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা সেটা করবো। দেখা গেছে ওই রাস্তা দিয়ে যাইতেছে কথা বার্তা বললো ওর সাথে কথা বনিবনা হয় নাই মামলা দিয়ে দিলো। মামলায় লেখবো আমারে রেপ করবার আইছিলো,আমার ওড়না ধরে টান দিয়েছিলো এরকম অনেক কিছু হইত। স্থানীয় ছাত্রদল নেতা মোঃ ওয়াসিম বলেন,আমি ছাত্র রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন যাবত জড়িত। রাহা মাহমুদা পলি সে একজন বাজে চরিত্রের এবং খারাপ মহিলা। এলাকায় এমন কোন অপকর্ম নাই সে করে না। প্রত্যেকটা অপকর্মের সাথে সে জড়িত। মাদক, থানার দালালি , তারপরে চাঁদাবাজি এই ধরনের অনেক অপকর্মের সাথে সে জড়িত। সব মিলিয়ে সে একজন বাজে চরিত্রের অধিকারী। বঙ্গবন্ধু ছাত্র ইউনিয়নের সেক্রেটারিসহ আরও কিছু লোকজন নিয়ে এসে পাড় তিল্লি বাজারে অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা করে মারার একটা প্ল্যান করেছিলো। আমাকে যারা মারতে আসছিলো তাদেরকে ধরে এলাকাবাসী গণধোলাই দেয় এবং একজনকে আটকে রাখে। আটকে রাখার পর তার জবানবন্দি নেওয়া হয়। জবানবন্দিতে জিজ্ঞেস করা হয় কে পাঠিয়েছে তোমাকে? পরে সে বলছে আমাকে পাঠাইছে রাহা মাহমুদা পলি। তার দ্বারা এলাকাবাসী জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তার জন্য দলের ভোট অনেক কমে গেছে।তার দ্বারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এইসব মহিলাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে আজীবন এর জন্য বহিষ্কার করা উচিত। পাড়তিল্লি বাজারের ঝাড়ুদার বলেন, আমি পাড়তিল্লি বাজারে আট বছর যাবত ঝাড়ু দেই। আমার জামাই অসুস্থ,তাই ঝাড়ু দিয়া সংসার চালাই। আগের কমিটি ছিল আমার কাছে কোন টাকা পয়সা চায় নাই। কিন্তু বর্তমানে (পলি) নাকি ৫২ হাজার টাকা দিয়ে ডাক আনছে ডাকের অর্ধেক টাকা আমারে দিতে হইবো। সে বলে আমি এত টাকার ডাক আনছি, আমি তো তোমারে খাইতে দেবো না। আমি কইছি , আগের কমিটি তো টাকা চায়নাই, আমি টাকা দিতে পারুম না, সে বলে লাথি দিয়া তোরে বাজার থেকে বের করে দিমু।তুই কেমনে এখানে কাজ করে খাস তা আমি দেখুম , তারপরও আমি দেই নাই দেখে অনেক গ্যাঞ্জাম করছে কুদ্দুসের ডাকাতের মেয়ে পলি। উনি মহিলা হইলে কি হইবো অনেক পাওয়ারফুল মহিলা, আমরা গরীব মানুষ, আমাগো লাত্থি দিয়ে পারবো! কিন্তু আমরা তো পারবো না। তিল্লি ইউনিয়নের মোঃ সাগর হোসেন, তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। পলি তার সম্পর্কে ফুফু লাগলেও পলির নির্যাতনের স্বীকার থেকে বাদ জাননি তিনিও। সাগর বলেন,পলির উস্কানিতে আমার ও আমার পরিবারের উপর অনেকবার হামলা হয়েছে। আশেপাশে অনেক লোকজন আছে জাইনা দেখেন তার চরিত্র সম্পর্কে। আমি চাই আমার মত অবস্থা আর কারও না হোক। এলাকায় যেনো আমরা শান্তি শৃঙ্খলা ভাবে চলাফেরা করতে পারি। তবে এ সকল বিষয়ে রাহা আহমেদ পলি বলেন ,যারা আমার নামে অভিযোগ আপনার কাছে দিছে তারা আমার শত্রু আমার বিপক্ষ।প্রতিপক্ষ মিথ্যা বানোয়াট বলে আমার রাজনৈতিক ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
মন্তব্য করুন