

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) বেপরোয়া অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সদস্যরা এবার এক আনসার সদস্যের নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে।
আহত আনসার সদস্যের নাম ফিরোজ সরকার। আটক তিনজন হলো-ভাড়ায় রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স চালক রজব, আব্দুল্লাহ ও মারুফ। ঘটনার পর অভিযান শুরু হলে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের মূলহোতা আল মামুন রাব্বুল, বাদশা, ডালিম ও আলিম গা-ঢাকা দিয়েছেন।
আনসার সদস্যরা জানান, দুপুরে হাসপাতালের ৪ নম্বর ফটকে দায়িত্ব পালন করছিলেন ফিরোজ সরকার। এই ফটক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ নিষেধ। তারপরও একটি অ্যাম্বুলেন্স ৪ নম্বর ফটক দিয়ে ঢুকে পড়ে। ফিরোজ বাধা দিলেও অ্যাম্বুলেন্সটি সোজা জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে রোগী তুলতে শুরু করে। পেছনে পেছনে ফিরোজ আলম সেখানে গিয়ে এভাবে জোর করে ঢুকে পড়ার কারণ জানতে চান। এ সময় তার সঙ্গে তর্ক শুরু করেন ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক।
তখন পাশে থেকে আরেক অ্যাম্বুলেন্স চালক এসে ওই আনসার সদস্যকে ঘুসি মেরে বসেন। এতে নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে ফিরোজের। পরে অন্য আনসার সদস্যরা এসে দুজনকে ধরে ফেললেও অ্যাম্বুলেন্স চালকরা এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা হাসপাতালের বাইরে গিয়ে রাস্তার পাশে লাঠিশোটা ও হাসুয়া নিয়ে অবস্থান নেন। আর আনসার সদস্যরা অবস্থান নেন হাসপাতালের সামনে। এরই মধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা আসেন। তারা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেন।
উল্লেখ্য, রামেক হাসপাতাল ঘিরে বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সিন্ডিকেট খুবই বেপরোয়া। তারা রোগী এবং মরদেহ জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকেন। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন সে দলের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। বর্তমানে এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন আল মামুন রাব্বুল, বাদশা, ডালিম ও আলিম নামের চারজন। এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধের জন্য সম্প্রতি রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, নগর পুলিশের কমিশনার, র্যাব-৫ এর অধিনায়কের কাছেও চিঠি দেন তিনি।
আনসার সদস্যের নাক ফাটানোর ঘটনার বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, ‘বহিরাগত এই অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা খুবই বেপরোয়া। তাদের মধ্যে কোনো রকম মানবিক মূল্যবোধ নেই। তারা রীতিমতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে থাকে। এটা নিয়ে সম্প্রতি আমি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। এরই মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল। তিনজন ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ জন্য যে অ্যাম্বুলেন্সটি ঢুকে পড়া নিয়ে ঘটনা, সেটি জব্দ করে নিয়ে গেছে পুলিশ।’
মন্তব্য করুন