

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৩ আসন জোটের প্রার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে—এমন গুঞ্জনে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দলের জন্য ভবিষ্যতে সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব নেতাকর্মী হামলা-মামলার শিকার হয়ে দলের জন্য কাজ করে গেছেন, দলীয় মনোনয়ন তাদের মধ্য থেকেই দেওয়া উচিত।
অনেকে মনে করছেন, এ আসনটি রাখা হয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের জন্য। এমন সম্ভাবনা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্রই চলছে তুমুল আলোচনা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে দলের দুই হেভিওয়েট নেতার মধ্যে চলছে নীরব প্রতিদ্বন্দ্বিতা। একদিকে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক বেগম সেলিমা রহমান, অন্যদিকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপি ইতিমধ্যে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তবে বরিশাল জেলার ৫টি আসনের মধ্যে ৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করলেও বরিশাল-৩ আসনে এখনো কোনো নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ অবস্থায় গুঞ্জন উঠেছে, জোটের প্রার্থীকে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দলের ভেতরে।
নেতাকর্মীরা বলছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ভোট দিতে পারেননি। কর্মী থেকে শুরু করে কেউই রেহাই পাননি হামলা ও মামলার হাত থেকে। এমন অবস্থায় দলের প্রার্থী বাদ দিয়ে জোটের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে আসনটি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
৬টি ইউনিয়ন নিয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা এবং মুলাদী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১০ হাজার ৯২ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৬ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮২৫ জন এবং হিজড়া ভোটার ১ জন।
২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যকার তিনটি নির্বাচন বাদ দিলে হিসাব কষে দেখা যায়, বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনটি ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপির আসন হিসেবেই বিবেচিত। কারণ ১৯৭৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এ আসনে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন চারবার, আর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন দুইবার করে।
দেহেরগতি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “গ্রামের অনেক মানুষ আছে যারা দলকে ভালোবাসে। সেখানে দলের পরিবর্তে অন্য দলের প্রার্থী এলে সেটি হবে বিপরীতমুখী পরিস্থিতি, কমে যাবে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি।”
বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ওয়াহিদুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, “এই আসনটি জোটের প্রার্থীকে দিলে নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আসন্ন নির্বাচনে আমরা দলের প্রার্থীকেই দেখতে চাই।”
স্থানীয়ভাবে ইতিমধ্যেই ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের রাজনৈতিক তৎপরতা ও দলীয় নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা চোখে পড়ছে।
মন্তব্য করুন