

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কক্সবাজারের উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহৃত তিন বছর বয়সী রোহিঙ্গা শিশু মোহাম্মদ ইছাকে মুক্তিপণ ছাড়াই অক্ষত অবস্থায় চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে। পরিবারের অভিযোগ, সেদিন সকালে বাড়ির আঙিনায় খেলার সময় দুর্বৃত্তরা শিশু ইছাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও শিশুটির কোনো খোঁজ না মেলায় উদ্বেগে পড়ে পরিবার। একই দিন অজ্ঞাত একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পরিবার ক্যাম্প প্রশাসনের সহায়তায় দুই দিন পর, অর্থাৎ ৯ নভেম্বর, উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিশুটির পিতা মোহাম্মদ আমির আলী।এরপর উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করেন, যা ছিল চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায়। উখিয়া থানা থেকে চন্দনাইশ থানায় সহযোগিতা চেয়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পাঠানো হয়।
বার্তা পেয়ে চন্দনাইশ থানার ওসি গোলাম সরওয়ার এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল দ্রুত অভিযান শুরু করে। টানা একদিনের অভিযানের পর সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে উপজেলার দোহাজারী এলাকা থেকে অক্ষত অবস্থায় ইছাকে উদ্ধার করা হয়।
চন্দনাইশ থানার ওসি গোলাম সরওয়ার বলেন,“পরিকল্পনা অনুযায়ী, মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীকে নির্দিষ্ট স্থানে আসতে বলা হয়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারী পালিয়ে যায়। শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হই।”
তিনি আরও জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে সোমবার বিকেলে শিশুটিকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।উখিয়া থানার ওসি জিয়াউল হক বলেন,“দুই থানার সমন্বিত ও দ্রুত পদক্ষেপের কারণে শিশুটিকে কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি, এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
উখিয়ার ৪ নম্বর ক্যাম্পের বি ব্লকে গিয়ে দেখা যায়, উদ্ধার হওয়া শিশু ইছা বাবা-মায়ের কোলে খেলছে। পরিবার জানায়, মানসিকভাবে কিছুটা ভীত থাকলেও শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে।শিশুর পিতা মোহাম্মদ আমির আলী বলেন,
“আমার ছেলেকে পাবো আশা করিনি। সে আবার আমার কোলে ফিরে এসেছে—এর চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। উখিয়া ও চন্দনাইশ থানার ওসি স্যাররা অনেক কষ্ট করেছেন, তারা না থাকলে জানি না কী হত।”
স্থানীয়দের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশ এলাকায় শিশু অপহরণের ঘটনা বেড়ে গেছে। তারা মনে করছেন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি এভাবে আন্তরিক থাকে, তবে অপহরণকারীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতে প্রাণহানি রোধ করা যাবে।
মন্তব্য করুন