

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আগামী ১০ থেকে ২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের ৩০তম জলবায়ু সম্মেলন (কপ-৩০)।
বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশের প্রতিনিধি একত্রিত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলার পথ খুঁজবেন এই সম্মেলনে। অংশ নেবেন ১২ হাজারেরও বেশি জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী।
এবারের এই বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন সাতক্ষীরার নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান। তাঁরা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের শিশুদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরবেন।
আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষক দম্পতি মো. শহীদুল ইসলাম ও জেসমিনের কন্যা নওশীন ইসলাম প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি আশাশুনি উপজেলা শিশু ফোরামের সভাপতি এবং দীর্ঘদিন ধরে শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করছেন।
অন্যদিকে, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের জি. এম. রইসউজ্জামান ও মোছা. লায়েকা খানম দম্পতির সন্তান নুর আহমেদ জিদান কেন্দ্রীয় উপকূলীয় শিশু ফোরামের সভাপতি এবং সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এই দুই কিশোর-কিশোরী জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস), চিলড্রেন ফোরাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিআরআর এবং কেএনএইচ–বিএমজেড-এর সহযোগিতায় এই বৈশ্বিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। ১৪ নভেম্বর তারা “চিলড্রেন ইন ক্রাইসিস” শীর্ষক ইয়ুথ প্যাভিলিয়নের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবে।
নওশীন ইসলাম বলেন, উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশা তুলে ধরব। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টিকর খাবার ও স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে উন্নত দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আমরা পৃথিবীর আগামী প্রজন্ম একটি বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া এখন আপনাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও প্রকট হচ্ছে। আমরা শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে, খাদ্যসংকট দেখা দিচ্ছে, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
নুর আহমেদ জিদান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরার উপকূল এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। এটা এখন বাঁচা-মরার লড়াই। কপ-৩০ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের বলব- উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলের মাশুল আমাদের শিশুদের ওপর চাপিয়ে না দেয়। বরং ক্ষতিপূরণ দেয়।
নওশীনের বাবা শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশ্বমঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে, সাতক্ষীরার জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কথা বলবে -এটা আমার জীবনের গর্বের মুহূর্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
এই দুই শিশুর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের উপকূলীয় শিশুদের কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে রওনা হয়ে তাঁরা ১২ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ব্রাজিলের বেলেমে কপ-৩০ সম্মেলনে অংশ নেবেন। ১৭ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
মন্তব্য করুন