শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালের তরুণ, কৃষক, শ্রমিক ও জেলেদের প্রত্যাশায় ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
প্রতীকী ছবি
expand
প্রতীকী ছবি

দরজায় কড়া নাড়ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শহর থেকে গ্রাম- টংয়ের দোকান, চায়ের টেবিল, ফেরিঘাট কিংবা ভাঙা বেঞ্চে বসে চলছে একটাই আলোচনা— “আগামী নির্বাচনে কে আসবে, কেমন হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ?”

ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভোটের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোও ব্যস্ত প্রার্থী বাছাই ও প্রচার কৌশল সাজাতে। কিন্তু মাঠের মানুষের কাছে প্রশ্ন একটাই— “এই নির্বাচনে বদলাবে কি তাদের জীবন?”

তরুণদের আশা: কর্মসংস্থান ও অংশগ্রহণ। দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখন তরুণ। এই বিশাল ভোটারগোষ্ঠীর ভাবনা ও আকাঙ্ক্ষা নানা রঙে রঙিন।

বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ'র শিক্ষার্থী তাহসিন ইসলাম বলেন —আমরা এমন সরকার চাই, যারা চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করবে, দুর্নীতি রোধ করবে, আর তরুণদের সিদ্ধান্তে গুরুত্ব দেবে।

তরুণ ভোটার আনজুম সাদিয়া'র প্রত্যাশা —নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হোক। যেন ভোটের দিন সত্যিকারের উৎসবের মতো হয়।

ফসলের ন্যায্য দাম, গ্রামীণ মাঠে এখনও কাঁচা ধানের গন্ধে ভরপুর বাতাস। সেই মাঠের কৃষকেরাও অপেক্ষায়— কেমন সরকার আসবে তাদের পাশে।

বরিশালের উজিরপুরের এক কৃষক মন্নান বলেন —আমরা সারের দাম আর চাষের খরচ নিয়ে হিমশিম খাই। নতুন সরকার যদি ন্যায্য দাম নিশ্চিত করে, তবেই কৃষক টিকবে। একই গ্রামের কৃষক রবিউল বলেন — সরকার যদি সহজে ঋণ দেয় আর সেচের খরচ কমায়, তাহলে আমরা আরও ভালো ফসল ফলাতে পারব।

ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কাজ কারখানার আঙিনায়, রাস্তায় কিংবা রিকশার হ্যান্ডেলে ঘাম ঝরানো মানুষগুলোও পিছিয়ে নেই ভোটের আলোচনায়।

একজন গার্মেন্টস শ্রমিক আলেয়া বলেন, দামের সঙ্গে বেতনের মিল নেই। আমরা চাই এমন সরকার, যারা শ্রমিকের কথা ভাববে। একজন রিকশাচালক মনসুর যোগ করেন, ভাড়া কম, খরচ বেশি। গরিব মানুষ যেন বেঁচে থাকার সুযোগ পায়, এটাই আমাদের দাবি।

জীবিকার নিশ্চয়তা ও সন্তানদের শিক্ষা। নদী আর সাগরপাড়ের জেলেদের জীবনে আছে মৌসুমি নিষেধাজ্ঞা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর অনিশ্চয়তার ছায়া। তবুও তাদের চোখে এখন আশার আলো— নতুন সরকার তাদের পাশে দাঁড়াবে কিনা!

চরকাউয়া এলাকার জেলে রফিক বলেন,—নিষেধাজ্ঞার সময় আমরা বেকার থাকি। তখন যেন সরকার খাবার আর টাকার সহায়তা দেয়। পাশ থেকে আরেকজন যোগ করেন —আমাদের সন্তানরা যেন স্কুলে যেতে পারে— সেই সুযোগটাই চাই।

প্রত্যাশা একটাই: বদলে যাক জীবন। গ্রাম থেকে শহর, নদীপাড় থেকে কারখানার আঙিনা— সর্বত্রই এখন একই সুর। সবাই চায় এমন সরকার, যারা তাদের কষ্ট বুঝবে, পরিশ্রমের মর্যাদা দেবে।

নির্বাচনের ঢোল যত বাজছে, ততই বাড়ছে এই প্রশ্নের প্রতিধ্বনি—এই নির্বাচনে কি বদলাবে আমাদের জীবন? উত্তর দেবে আগামী ভোটের ফলাফলই।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন