

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সাতক্ষীরা শহরের কাচ্চি ডাইনসহ কয়েকটি হোটেলে বিক্রির উদ্দেশ্যে পচা মাংস আনার অভিযোগে এক মাংস ব্যবসায়ীকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (২ নভেম্বর) সকালে শহরের লাবণী মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই দণ্ড দেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তি দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া বাজার এলাকার রুহুল কুদ্দুসের ছেলে আব্দুল কাদের। তিনি “কবির মিট” নামে সাতক্ষীরার কামালনগর বউ বাজারে একটি মাংসের দোকান পরিচালনা করতেন।
সম্প্রতি শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো বাইরে থেকে নিম্নমানের মাংস কিনে রান্না করছে, এমন অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করেন সাতক্ষীরা জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান। এ অভিযোগের পর মাংস ব্যবসায়ীরা শহরের প্রবেশমুখে পাহারা দিতে থাকেন যেন পচা বা নিম্নমানের মাংস শহরে ঢুকতে না পারে। তাদের নজরদারিতেই সকালে আব্দুল কাদেরকে আটক করা হয়।
মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা জানান, সকালে লাবণী মোড়ে সন্দেহজনক অবস্থায় একটি বস্তাভর্তি মাংস নিয়ে আসছিলেন আব্দুল কাদের। মাংসের রং ও গন্ধে সন্দেহ হলে তাঁকে আটক করে পৌরসভা ও প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা মাংস পরীক্ষা করে নিশ্চিত করেন যে এটি পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত।
সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান বলেন, অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আমাদের সমিতির সদস্য নন। আমরা চাই শহরে যেন কোনোভাবেই বাইরে থেকে নিম্নমানের মাংস না ঢোকে।
অভিযুক্ত আব্দুল কাদের জানান, তিনি দেবহাটার কুলিয়া বাজারে ছাগল জবাই করে সেই মাংস সাতক্ষীরা শহরের কাচ্চি ডাইনসহ কয়েকটি হোটেলে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিলেন।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা দীপঙ্কর দত্ত, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি অফিসার ডা. বিপ্লব জিৎ মণ্ডল, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান, কাটিয়া ফাঁড়ির এসআই শেখ বোরহান এবং পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. রবিউল আলম লাল্টু প্রমুখ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি অবৈধভাবে পচা মাংস এনে শহরের হোটেলগুলোতে সরবরাহ করছিলেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরীক্ষায় তা প্রমাণিত হয়েছে। কোন হোটেলে মাংস সরবরাহ করা হতো, তা জানতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মামলা নং ৬৭০/২০২৫ ধারায় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের ৪৫ ধারা মোতাবেক তাকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও ২০ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব জিৎ মণ্ডল বলেন, মাংসটির স্বাভাবিক রং নেই এবং তীব্র দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এটি হয়তো বহু আগে জবাই করা অথবা মৃত পশুর মাংস হতে পারে। মানবস্বাস্থ্যের জন্য এমন মাংস অত্যন্ত ক্ষতিকর।
পরে জব্দকৃত প্রায় ৩০ কেজি মাংস জনসমক্ষে কেরোসিন ঢেলে ধ্বংস করা হয়।
মন্তব্য করুন