বৃহস্পতিবার
২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

থানায় অভিযোগ করার পরেও রাতের অন্ধকারে গাছ কাটলো দুর্বৃত্তরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১৩ পিএম
ছবি সংগৃহীত
expand
ছবি সংগৃহীত

হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতির পর থানায় অভিযোগ দিয়েও রক্ষা করা যায়নি আমগাছ। বিক্রি করা জমি জোর করে ফেরত নেওয়ার আশায় জবরদখল করার জন্য আম বাগানের সাতটি উচ্চ ফলনশীল আমগাছ রাতের অন্ধকারে কেটে ফেলেছে অভিযুক্তরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের চাপড় এলাকায় রবিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এসব গাছ কেটে ফেলা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা, জোগানদার, জমির মালিক, আমবাগানের ক্রেতা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাপড় মৌজার আরএস ৭৯৭, ৭৯৮, ৭৯৯, ৮৪৬ ও ০২ নম্বর জেল এর ৫৮ শতক জায়গায় আমগাছ রয়েছে ৬৫টি। আমগাছসহ জমিটি শিবগঞ্জ উপজেলার সাহবাজপুর ইউনিয়নের দৌলত মন্ডল দুলু ওরফে তরিকুল ইসলাম বিক্রি করেন। পরে তা দুই হাত বদল হয়ে জমি কিনে নেন আড়গড়াহাট এলাকায় মৃত ইমরান খানের ছেলে মো. মামুনুর রশীদ (৩৫)। জমিতে থাকা আমগাছগুলো ৫ বছরের জন্য তিনি বিক্রি করেন মইনুদ্দিন জামান রনির কাছে।

এদিকে জমি বিক্রি করলেও এখনও মালিক দাবি করে জমি থেকে চলে যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে দৌলত মন্ডল দুলু ওরফে তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

গত ২১ নভেম্বর জমিতে আসলে প্রাণনাশের হুমকি দেন জমির মালিক মামুনুর রশীদকে। এঘটনায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ দেয়ার পরদিন রাতেই গাছগুলো কেটে ফেলা হয়।

জমির মালিক মামুনুর রশীদ জানান, যাদের বিরুদ্ধে আমি আগের দিন শিবগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ করেছি তারাই রাতের অন্ধকারে ক্ষুব্ধ হয়ে বাগানের সাতটি আমগাছ নির্মম ভাবে কেটে ফেলেছে। ক্রয় সূত্রে দীর্ঘদিন যাবৎ এই জমি আমি ভোগ দখল করে আসছি। ভোগদখল করাকালীন কোনো প্রকার বাধার সম্মুখীন হয়নি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়।

তিনি আরও বলেন, প্রায় দুই বছর আগে জমি বিক্রি করে দিলেও বর্তমানে কোনো প্রকার গ্রহনযোগ্য কাগজপত্র না থাকার পরেও অযৌক্তিকভাবে জোরপূর্বক করে বিক্রিত জমি জবরদখল করে ভোগ করার অপচেষ্টা করছে। গাছ কেটে আমার চরম ক্ষতি করেছে, তাই আইনের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

আম বাগানের জোগানদারের স্ত্রী টুনিয়ারা বেগম বলেন, তরিকুল ইসলাম দুলু কয়েকদিন আগে আমাকে বলেছে, তুই বাগানে আর যাবিনা। তবুও যদি বাগানে যাস, তাহলে লাশ ফেলে দিবো। বাগানের পাশের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, বাগানটি প্রথমে ছিলো দুলুর, তারপর শিবগঞ্জের লোকের কাছে বিক্রি করে। বর্তমান মালিক মামুনুর রশিদ শিবগঞ্জের লোকের কাছ থেকে ক্রয় করে। এই গাছগুলো কেটে ফেলে অন্যায় করেছে। গাছের সাথে তো কারো বিরোধ ছিল না, তাহলে সেসব কাটা হলো কেন?

আমবাগানের মালিক মইনুদ্দিন জামান রনি বলেন, আমি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে গতবছর ৫ বছরের জন্য বাগানের আমফল বর্তমান মালিক মামুনুর রশিদের কাছ থেকে ক্রয় করি। গতবছর বাগানে খরচের তুলনায় লাভ হয়নি। এবছর লাভের আশায় বাগান পরিচর্যা করতে গিয়ে আবারও অনেক টাকা খরচ করেছি। কিন্তু আম গাছ কেটে ফেলাই আমি এখন দিশেহারা। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এনিয়ে অভিযুক্ত দৌলত মন্ডল দুলু ওরফে তরিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও(সি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, এনিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন