শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করতোয়া নদীভাঙনে বিলীন বসতবাড়ি ও আবাদি জমি 

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:১০ এএম
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়ার নদী ভাঙন
expand
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়ার নদী ভাঙন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়ার নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিক ঈদগাহ মাঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ নানা স্থাপনা। নদীতে পানি বৃদ্ধি আর কমার সময় আতংকে দিন কাটে নদী পারের মানুষের। বর্তমান বর্ষা মৌসুমে করতোয়া নদীতে ২ দফা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিঘার পর বিঘা জমি ভাঙনে বিলীন হয়েছে।

জানা গেছে, ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমানা হয়ে উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নে বালুপাড়া হয়ে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা সীমানা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুরে করতোয়া নদী প্রবাহিত। এই ৭০ কিলোমিটারের প্রায় ১০টি পয়েন্টে নদী ভাঙনে বিপাকে পরেছে স্থানীয়রা।

এরমধ্যে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের দূর্গাপুর, বিশ্বনাথপুর ও তালুক রহিমাপুরের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এই এলাকার মানুষ ভয়াবহ ভাঙনে আতঙ্কিত । করতোয়ার ভাঙনে শিকার হয়ে প্রায় ২২ বিঘা জমি হরিয়েছেন দরবস্ত ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের সাদেক আলী। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে করতোয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ, চার গ্রামের ২ শতাধিক বসতভিটা, মসজিদসহ অনেক অবকাঠামো। ভাঙন দেখা দিয়েছে কাটাবাড়ীর ফুলহার, সাপমারা ইউপির সাহেবগঞ্জ, মেরি, চক রহিমাপুর, গুমানীগঞ্জের তরফমনু, কাইয়াগঞ্জ ও পৌরসভার ১ এবং ৪নং ওয়ার্ডের খলসী চাঁদপুর বালেমারি, বোয়ালিয়া এলাকার বেশ কিছু এলাকায়।

এছাড়াও ফুলবাড়ী ও তালুককানুপুর ইউনিয়নের বড় রঘুনাথপুর, শ্যামপুর-পার্বতীপুর, কড় সোহাগী, সুন্দুইলসহ চারগ্রাম এবং সুন্দুইল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক, ফসলি জমি রক্ষায় ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ভাঙন কবলিত ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন করেছে ।

এর মধ্যে করতোয়া-কাটাখালী নদীর ভাঙ্গনে সুন্দুইল গুচ্ছগ্রাম টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতি নিয়ত ফসলি জমি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। এছাড়াও ভাঙন আতঙ্কে এলাকার হাজারো পরিবার, ঈদগহ মাঠ, বড় রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক ও প্রায় ২শ’ বিঘা ফসলি জমি এবং অসংখ্য গাছপালা।

দরবস্ত ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে ওবাইদুল জানান, আমাদের সব জমিজমা এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একমাত্র বসতভিটা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। এখন বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব জানি না। সাহেব আলী শেখে বলেন নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁশের পাইলিং দিয়ে চেষ্টা করা হলেও তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। ঘরবাড়ি,ফসলি জমি রক্ষায় ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের কাছে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তার। মালেকা,মল্লিকা বেগম বলেন কিছু চাইনা শুধু নদী শাসন চাই। যাতে আর ভাঙনের শিকার হতে না হয়। একই গ্রামের মিন্টু মিয়ার স্ত্রী রেশমা আমাদের সব আবাদী জমি নদী গর্ভে চলেগেছে এখন বড়ি জায়গা টুকু ভেঙ্গে গেলে আমরা ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় যাব।

এলাকার রক্ষায় অবিলম্বে ভাঙ্গন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ দিয়ে অস্থায়ী কাজ করাসহ পরবর্তীতে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্লক দিয়ে স্থায়ী কাজ করার দাবি জানান। এ বিষয়ে পনি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর।

জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ জানান, ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডিসি অফিসে মিটিংয়ে রয়েছে বলে জানান।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন