

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত মানবাধিকার ও নারী অধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদীকে পুনরায় গ্রেফতার করেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী।
তার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৫৩ বছর বয়সী এই অধিকারকর্মীকে পূর্ব ইরানের মাশহাদ শহরে কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে আটক করা হয়।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি।
এই ঘটনার পর নোবেল কমিটি এক বিবৃতিতে মোহাম্মদীর গ্রেফতারকে ‘নৃশংস’ আখ্যা দিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তারা ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে তার বর্তমান অবস্থান প্রকাশ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোনো শর্ত ছাড়াই দ্রুত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
ইরানে নারীর ওপর নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকার জন্য ২০২৩ সালে নার্গিস মোহাম্মদী নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। এর আগে ২০২১ সাল থেকে তিনি তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি ছিলেন। গুরুতর অসুস্থতার কারণে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তাকে তিন সপ্তাহের জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।
সর্বশেষ গ্রেফতারের সময় তিনি তার প্রয়াত আইনজীবী খোসরো আলিকর্দির স্মরণসভায় অংশ নিচ্ছিলেন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ওই আইনজীবীকে তার অফিসে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে নরওয়ে-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘ইরান হিউম্যান রাইটস’ একটি স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
জানা গেছে, ওই স্মরণসভায় মোহাম্মদীর সঙ্গে আরও কয়েকজন অধিকারকর্মীকেও আটক করা হয়। সে সময় তারা ‘স্বৈরশাসকের পতন হোক’ ও ‘ইরান চিরজীবী হোক’—এ ধরনের স্লোগান দিচ্ছিলেন।
মোহাম্মদীর স্বামী তাগি রহমানি বিবিসি ফার্সিকে জানান, তার স্ত্রীকে বলপ্রয়োগ করে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইনজীবীর পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং পুরো বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। তার মতে, এই গ্রেফতার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
নার্গিস মোহাম্মদী সম্প্রতি অভিযোগ করে আসছিলেন যে, ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর ইরানে ভিন্নমত দমনে রাষ্ট্রীয় দমননীতি আরও জোরদার হয়েছে।
গত সপ্তাহে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক লেখায় তিনি উল্লেখ করেন, ইরানে ব্যক্তিগত ও জনজীবনের প্রতিটি স্তরে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে। নজরদারি, সেন্সরশিপ, নির্বিচার আটক, নির্যাতন এবং সহিংসতার স্থায়ী হুমকিতে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত।
গত এক বছর ধরে তিনি বাধ্যতামূলক হিজাব পরা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং সারা দেশে অধিকারকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তাকে বহুবার ব্যক্তিগত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ইরানি কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে তাকে ১৩ বার গ্রেফতার করেছে, পাঁচটি মামলায় দণ্ডিত করেছে এবং মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫৪ বার বেত্রাঘাতের সাজা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন

