

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এক অভূতপূর্ব ঘটনার পর স্থানীয় থেকে রাজ্য রাজনীতি পর্যন্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের বিজেপি কার্যালয়ের ভেতরেই প্রকাশ্যে হাতাহাতি ও জুতাপেটা ঘটে যায়, যা মুহূর্তেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন খড়গপুর পৌরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মমতা দাস এবং দলেরই আরেক নেতা অশোক সিংহ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফুটপাথে একটি খাবারের দোকান বসানো নিয়ে শুরু হয় বিরোধ। অভিযোগ, দোকান বসাতে আগ্রহী এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা দাবি করেছিলেন কাউন্সিলর মমতা দাস। যদিও তিনি তা অস্বীকার করে উল্টে অশোক সিংহের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।
মমতার দাবি, অশোক সমাজবিরোধী, দলে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। অন্যদিকে অশোকের অভিযোগ, মমতা টাকা আদায় করতে চাইছিলেন। আমি প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে জুতা দিয়ে মারেন।
ঘটনাস্থলেই অশোক চিৎকার করে বলেন, দেখুন, নারী হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে, আমাকে আঘাত করছে। আমি এখনই পুলিশ ডাকছি। জবাবে মমতার সাফ কথা, আবারও মারব, অবশ্যই মারব।
কার্যালয়ের ভেতর প্রকাশ্যে এই সংঘর্ষে বিব্রত বিজেপি। জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে কেউ গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বিরোধী তৃণমূল ইতিমধ্যেই খোঁচা দিতে ছাড়েনি। জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা মন্তব্য করেছেন, বিজেপি নেতারাই চাঁদাবাজ, ভাগাভাগি নিয়েই তাদের মধ্যে মারামারি।
এর আগে খড়গপুরেই তৃণমূলের এক নেত্রী প্রকাশ্যে এক বৃদ্ধকে মারধরের ঘটনায় সমালোচিত হয়েছিলেন। এবারে একই ধরনের দৃশ্য বিজেপির দলে ঘটায় তুলনার সুযোগ পেয়েছে প্রতিপক্ষ।
বিশ্লেষকদের মতে, ঘটনাটি নিছক ব্যক্তিগত বিরোধ নয়; স্থানীয় প্রভাব খাটানো, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও দলীয় পদ দখলের লড়াই, সবকিছুর মিশ্রণ। সাধারণ মানুষ এখন দুই পক্ষকেই চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত দেখতে পাচ্ছে।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় বিজেপি রাজ্যজুড়ে চাপের মুখে পড়েছে। একদিকে অভ্যন্তরীণ কলহ সামলাতে হচ্ছে, অন্যদিকে বিরোধীদের আক্রমণ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনা বিজেপির ভাবমূর্তিকে বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে।
মন্তব্য করুন