রবিবার
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফের’ বললেন রাবি শিক্ষক

এনপিবিনিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম
পদার্থ বিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান ও তার পোস্ট
expand
পদার্থ বিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান ও তার পোস্ট

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের আজ জন্মদিন। বেগম রোকেয়া দিবসে নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

একই দিন সামাজিক মাধ্যমে বেগম রোকেয়া কাফির ও মুরতাদ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের ওই সহযোগী অধ্যাপকের নাম খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, “আজ মুরতাদ কাফির বেগম রোকেয়ার জন্মদিন।”

এই বিষয়ে রাবির সাবেক শিক্ষার্থী এস এম আতিক মন্তব্য করেন, “৫ অগাস্ট আমাদের বাকস্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এর সুবাদে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষকও এখন ফতোয়া দিতে পারেন।”

রাকসুর বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক ইমরান লস্কর বলেন, উনি যে মন্তব্য করেছেন—এটা একান্তই তার মন্তব্য। আমি বেগম রোকেয়াকে যতটুকু জেনেছি, যতটুকু পড়েছি—তার লেখার মাঝে সংস্কারমুখী একটা চিন্তা ছিল। তৎকালীন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে ‘ধর্ম ও পুরুষশাসিত সমাজের’ অনেক উপাদানকে নারী জাগরণের অন্তরায় হিসেবে অনেক রচনায় তিনি উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এটা একান্তই রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের চিন্তা। এই সংস্কারধর্মী চিন্তা যদি ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিধানগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক ও বিপরীতধর্মী হয়—তবে, কেউ যদি ধর্মের আইন আরোপ করে কাফের বা মুরতাদে আখ্যায়িত করে, সে ব্যাখ্যা একান্তই তার। আমি মনে করি পদার্থ বিজ্ঞানের যে শিক্ষক মন্তব্য করেছেন তা যেহেতু ধর্মীয় ব্যাখ্যার সাথে জড়িত, ফলে তা একজন স্কলারের ব্যাখ্যা নেয়া দরকার আছে। প্রত্যেকের নিজ নিজ বিশ্বাসে ভিন্নতা আছে, বিরোধিতা আছে। ধর্মীয় বিশ্বাসযুক্ত জনগোষ্ঠী ও সমাজে ধর্মকে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে।

রাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক জায়িদ হাসান জোহা বলেন, “সবারই নিজস্ব দর্শন থাকে, আর তার মাপকাঠিও আলাদা। তবে এ ধরনের মন্তব্য প্রকাশ্যে না বলাই উত্তম বলে মনে করি। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।”

রাবি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বলেন, "স্পষ্ট প্রামানাদি থাকার পরে যে কাফের কে কাফের বলে সাব্যস্ত করবেনা। সে নিজেও কুফর ও গোমরাহি তে নিমজ্জিত। রোকেয়া একজন স্পষ্ট ইসলাম বিদ্বেষী, শাতেম, কাফের ছিলেন।"

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, “যে পোস্টের ক্যাপশনে আমি এটি লিখেছি, সেই পোস্টেই বিস্তারিত সব ব্যাখ্যা আছে। আমার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে চাইলে কোনো ভালো আলেমের কাছে জানতে পারেন।”

উল্লেখ্য, বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিবছর রোকেয়া পদক দেয় বাংলাদেশ সরকার। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। ১৯৩২ সালের একই তারিখে কলকাতার সোদপুরে তার মৃত্যু হয়।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X