মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাউল আবুল সরকারের সুরা নাসের বিকৃত অনুবাদ ভাইরাল, ক্ষোভ

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
স্টেজে আবুল সরকার-ফাইল ছবি
expand
স্টেজে আবুল সরকার-ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শিল্পী আবুল সরকারের আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে আলোচিত এই বাউলকে সুরা নাসকে ‘নাচ’-এর সঙ্গে তুলনা করতে দেখা গেছে।

বলেন, ‘সুরা নাসে এত ‘নাচ’ কেন?’ (নাউজুবিল্লাহ) পরক্ষণেই তিনি আবারও বলেন, ‘আরেহ! নাচতে কইছে, এজন্য এত ‘নাস’।

ভিডিও ঠিক কবে ধারনকৃত, এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি সংবাদ মাধ্যম।

ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আবুল সরকার পুরো সুরা নাস তেলওয়াত করেন এবং সেখানে উল্লেখ থাকা ‘নাস’ শব্দটির ভিন্ন অর্থ করেন।

নাস-এর মূল অর্থ মানুষ হলেও তিনি এর বিকৃতি ঘটিয়ে ‘নাচ’ তথা ‘ড্যান্স’ উল্লেখ করে। তথ্যমতে, সুরাটিতে মোট পাঁচটি জায়গা ‘নাস (মানুষ) উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ‘কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস।

মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।’

এদিকে ওই বক্তব্যের ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন কেউ কেউ।

বিষয়টিকে ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ এবং সামাজিক সংবেদনশীলতা আঘাত উল্লেখ করে নেটিজেনরা বলছেন, ‘পবিত্র ধর্মীয় বাণীকে বিকৃত করে গান বা নাচের উপকরণ বানানো কাম্য নয়।’

রায়হান নামে একজন লিখেছেন, আবুল সরকার কোরআন মানুক বা না মানুক, সেটা সেটা নিয়ে কথা নেই।

কিন্তু তিনি এই ধরনের বিকৃতি করতে পারে না। তার ভাষ্য, সূরা নাসের মূল যে কথা, সেটার ব্যাখ্যা না কলে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।

তার ভাষায়, সুরা নাস মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। এই সুরায় আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে:

রব্বিন নাস (মানুষের রব): আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।

মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি): তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।

ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য): তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।

তথ্যমতে, সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে।

এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থনার সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।

হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়তেন, হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)

সুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)

আমার মুক্তচিন্তা নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘পবিত্র কুরআন নিয়ে এই কথাগুলো কোন মুসলমানের পক্ষে হজম করা সম্ভব?’

ভিডিওটি কমেন্টে আবু দাউদ নামে একজন লিখেছেন, ‘পবিত্র কুরআন নিয়ে যে বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বিকৃত উচ্চারণ করছেন, কোন মুসলমান যদি এর পক্ষে কথা বলে আল্লাহর কসম তার ঈমান থাকবে না।’

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X