

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায়; কারণ সরাসরি নির্বাচনে তাদের জয়ের সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, এসব দল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংকগুলোতে নিজেদের লোক বসিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ ভোগ করছে, যা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারবিরোধী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্তির জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছিল, ঠিক একইভাবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের সাধারণ মানুষ, ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে—এই দুটিই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের বিজয়, তিনি বলেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই একটি সঠিক, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।
জনগণ যদি বাধাহীনভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে—ইনশাআল্লাহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।”
৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপির চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস্ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ এর সফল সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী হাসান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. খালেকুজ্জামান দীপুর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের মহাসচিব ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ড্যাবের সহসভাপতি ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. আবুল কেনান, ডা. পরিমল চন্দ্র বিশ্বাস, ডা. আদনান হাসান মাসুদ প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিজি হেলথের ডেপুটি ডাইরেক্টর ডা. নাসির উদ্দিন, ড্যাবের নেতা ডা. জাহিদুল কবির, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা. সাইদ মাহমুদ তমাল, ডা. সাইফুল, ডা. সফিকুল ইসলাম, ডা. আবু নূর মো. মাসুদ রানা, ডা. জহির মুক্তাদির রঞ্জু, ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ডা. সোহেল রানা, ডা. শেখ মাহবুবসহ অনেকে।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, যারা এখন সংস্কার প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাদের অনেকে বিদেশ থেকে আমদানি-কৃত; তাদের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। এভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা গণতন্ত্রের পরিপন্থি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যদের মধ্যে অনেকেই ৫ আগস্টের আন্দোলনে কোনো ভূমিকা রাখেননি; যোগাযোগের কারণে তারা সরকারে এসেছেন। প্রথম দিকে তাদের ধারণা ছিল শেখ হাসিনার সরকারের বাকী মেয়াদ পূর্ণ করা উচিত।
তিনি অভিযোগ করেন, এই সরকার এখন নিজেদের স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত; জনগণের মুক্তি বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো কনক্রিট রূপরেখা তারা দেয়নি। বরং নানা বিলাসীতায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে—এয়ার কন্ডিশন গাড়ি, বিদ্যুৎ বিল ছাড়াসহ সুবিধা-অসুবিধা পেয়ে তারা এখন আর জনগণের কথা ভাবছে না।
হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, “জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকারের পরিবর্তে কিছু দল নতুন ফর্মুলা দিতে চাইছে। প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি বা গণভোটের কথা বলা হচ্ছে—যা সাধারণ মানুষ সহজে বুঝবে না এবং এতে তাদের স্বাধীন ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন হবে।”
তিনি বলেন, গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। জনগণকে শুধু ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে বলা হলে তাদের স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি, জুলাই সমাজসহ আমরা সবাই একটি সনদে স্বাক্ষর করেছি যে নির্বাচনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আমরা সেই সনদ বাস্তবায়ন করবো—তাহলে গণভোটের প্রয়োজন কোথায়? তিনি মনে করেন, সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে ২৮ দফা বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করলে সেটিই ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের যৌক্তিক পরিণতি হতো।
মন্তব্য করুন