

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ভূমিকম্পের হালকা ঝাঁকুনির চেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভয় আর সেই ভয়কে কয়েক সেকেন্ডে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেয় সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব। ফেসবুক পোস্ট, হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ড এবং অজানা উৎসের বার্তায় প্রায়ই ছড়িয়ে পড়ে “আরও বড় ভূমিকম্প আসছে!”
এই ভিত্তিহীন বার্তাগুলো থেকে তৈরি হচ্ছে নতুন এক সমস্যা ‘ভূমিকম্প ইনফোডেমিক’। গুজবের চাপে মানুষ আসল সতর্কতা কখনোই ঠিক মতো অনুসরণ করতে পারে না।
গুজব কেন এত দ্রুত ছড়ায়?
বিশেষজ্ঞেরা একে বলেন ‘সৎ উদ্দেশ্যের গুজব’। অর্থাৎ, মানুষ সাহায্য করতে চাইছে শুধু তথ্যটি সত্য কিনা তা যাচাই করেনি। ফলে অজানা বিদেশি সাইট, জ্যোতিষী, বা মিথ্যা স্ক্রিনশট এসবই হয়ে ওঠে “ভবিষ্যদ্বাণী”র উৎস।
গুজব বিশ্বাস করার ৩টি বিপজ্জনক ফল ১. আসল সতর্কতা গুরুত্বহীন হয়ে যায়
বারবার ভুয়া ‘অ্যালার্ট’ পেয়ে মানুষ যখন সত্যিকারের সরকারি বার্তা পায়, তখন সেটিও অবিশ্বাস করে।
২. ভিড় ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে
গুজব শুনে লোকজন রাস্তায় ছুটতে গিয়ে পদদলিত বা আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
৩. জরুরি সেবার কাজে বাধা সৃষ্টি হয়
ভুল বার্তা যাচাই করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস বা রেসকিউ টিমের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়।
তাহলে ভূমিকম্পের নির্ভুল তথ্য কোথায় পাওয়া যাবে?
বিশেষজ্ঞ ও সরকারের মতে, বাংলাদেশে কেবল তিনটি উৎসই আসল এবং নির্ভরযোগ্য:
১. বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (BMD)
ভূমিকম্পের মাত্রা, উৎসস্থল, গভীরতা—সবকিছুর সরকারি তথ্য দেয়।
BMD–এর ওয়েবসাইট ও ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজই চূড়ান্ত সরকারি উৎস।
কোনো বিদেশি অ্যাপ বা সাইট ভুল তথ্য দিলেও, BMD–এর তথ্যই সঠিক হিসেবে গণ্য হবে।
২. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (MoDMR)
ভূমিকম্প-পরবর্তী সরকারি করণীয়, সতর্কতা ও নির্দেশনা এখান থেকেই প্রকাশ করা হয়।
প্রেস রিলিজ বা জাতীয় গণমাধ্যমে তাদের বার্তা অনুসরণ করলেই যথেষ্ট।
৩. গুগল আর্থকোয়েক অ্যালার্টস (Android)
অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো এখন ক্ষুদ্র সিসমোমিটারের মতো কাজ করে।
যেভাবে সাহায্য করে
কম্পন শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগেই ফোনে সতর্ক সংকেত পাঠায়।
“Drop, Cover, Hold” নির্দেশনাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখায়।
আপনাকে যা করতে হবে:
Settings > Safety & Emergency > Earthquake Alerts — এটি সক্রিয় আছে কি না দেখে নিন।
গুজব ছড়ালে আইনি ঝুঁকি
সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আতঙ্ক তৈরি করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইচ্ছাকৃতভাবে ভূমিকম্প বা অন্য দুর্যোগ নিয়ে ভুয়া তথ্য শেয়ার করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
নিজেকে ও অন্যকে বাঁচানোর সবচেয়ে সহজ উপায়, কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে সূত্র যাচাই করুন। ফরোয়ার্ড মেসেজ দেখে আতঙ্ক ছড়াবেন না। কেবল BMD, MoDMR এবং Google Alerts–এর তথ্যকে গুরুত্ব দিন।
মন্তব্য করুন
