রবিবার
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘না’ বলতে না পারা এটা কি সত্যিই মানসিক সমস্যা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
‘না’ বলতে না পারা
expand
‘না’ বলতে না পারা

অনেক মানুষেরই একটি সাধারণ সমস্যা হলো কারও অনুরোধ এলে সরাসরি “না” বলতে না পারা। পরিচিত হোক বা অপরিচিত, অন্যকে হতাশ করার ভয়ে অনেকেই নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েও সম্মতি দেন। এভাবে বারবার নিজের প্রয়োজনকে দমন করে হতাশা, রাগ বা মানসিক ক্লান্তি তৈরি হয়।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এই অতিরিক্ত ‘মানুষ খুশি করার প্রবণতা’ বা যাকে বলা হয় people pleasing, এর পিছনে থাকে গভীর উদ্বেগ ও ভয়। মনে হয়, না বললে সম্পর্ক খারাপ হবে, কেউ মন খারাপ করবে বা অপছন্দ করবে। তাই অনেকে না থাকলেও “হ্যাঁ” বলাকে নিরাপদ মনে করেন।

মনোপরামর্শদাতা মনসী কোঠারি বলেন, অনেকের শৈশব এমন পরিবেশে কেটেছে, যেখানে প্রশংসা বা ভালোবাসা পাওয়া একমাত্র সম্ভব ছিল আগ্রহ মেটানো, বাধ্য থাকা বা সবসময় ভদ্র আচরণ করার মাধ্যমে। বড় হয়ে তারা একই অভ্যাস বয়ে নিয়ে চলেন এবং মনে করেন, সবার অনুরোধ মেনে নেওয়া মানেই ভালো মানুষ হওয়া। কিন্তু এর ফল হয় ঠিক উল্টো—ভেতরে জমে যায় চাপ, বিরক্তি আর আত্মঅসন্তোষ।

অতিরিক্ত ‘হ্যাঁ’ বলার ফলে সম্পর্কেও ভারসাম্য নষ্ট হয়। সবসময় দিতেই দিচ্ছেন, কিন্তু বিনিময়ে পাচ্ছেন না যথেষ্ট। আবার অনেকেই মেলামেশার পরে বাড়ি ফিরে চিন্তা করেন—“কোথাও কি বেশি বলে ফেললাম?”, “কেউ ভুল বুঝল না তো?” কারও অনুরোধ পূরণ করতে গিয়ে নিজের কাজ, সময় কিংবা আরাম ত্যাগও করেন তারা, শুধু রাগানোর ভয়েই।

ভালো খবর হলো এই অভ্যাস বদলানো সম্ভব। প্রথমে জানতে হবে কেন আপনি অন্যকে খুশি করতে গিয়ে নিজের চাওয়া–পাওয়া দমন করছেন। তারপর ধীরে ধীরে সীমারেখা টানা এবং বিনয়ের সঙ্গে “না” বলার অনুশীলন করতে হবে। প্রথমে অস্বস্তি লাগলেও সময়ের সঙ্গে এটি সহজ হবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজের প্রয়োজনকে ছোট করে দেখা নয়। নিজের অনুভূতিরও মূল্য আছে। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়াও উপকারী হতে পারে।

সবার মন রক্ষা করতে গিয়ে যদি নিজের সুখটাই হারিয়ে ফেলেন, তাহলে তা আপনার জন্যও ভালো নয়, অন্য কারও জন্যও নয়। তাই সবচেয়ে আগে প্রয়োজন নিজের সঙ্গে ভালো থাকা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X